রবিবার, ৩০ জুন, ২০১৩

মন কাঁদিস না

           মন কাঁদিস না
      আবুলকালামআজাদবাসু

ওরে মন কাঁদিস না রোদি-য়া রোদি-য়া,
সময় থাকতে জ্বালাও নি কেন হিয়া!
ওরে মন কাঁদিস না আর অবেলায়,
জনম-বেলা গেল আঁধারে ফুরাইয়া
অবেলায় কেন কাঁদিস তাঁর লাগিয়া?
ওরে মন কাঁদিস না রোদি-য়া রোদি-য়া
বেলা গেল যে অজান্তে আঁধারে কাটিয়া
অবেলায় দিয়েছ বার্তা ফুঁৎকার দিয়া
গচ্ছিত ধন কিমতে প্রকাশি ভাবিয়া,
ও মনরে মন প্র-কাশিলাম চাহিয়া
অন্তঃ-জ্বালা তুষানলে জ্বালিয়া জ্বালিয়া
ওরে মন কাঁদিস না রোদি-য়া রোদি-য়া ৷


শুক্রবার, ২৮ জুন, ২০১৩

কুহকিনীর ডঙ্কা (১)

কুহকিনীর ডঙ্কা (১)
আবুলকালামআজাদবাসু

যতই বিপদের ডাক আসুক না কেন, খবরের কাগজে যতই লেখালেখি হোক না কেন সতর্কতা অবলম্বন, উন্নয়নশীল দেশগুলির প্রভাবশালী ব্যক্তিরা তা শুনেও শুনে না কারণ তারা দেশপ্রেমিক বটে কিন্তু প্রেমিক নয় ৷ কিন্তু কুহকিনীর মায়া সে রকম নয়, তার চালচলন অন্যরূপ সে প্রেমিক বটে কিন্তু আত্ম-প্রেম তার কাছে বেশী প্রাধান্য পেয়ে থাকে ফলে সে আগে ভোগ করে এবং পরে কুহকিনীর ডঙ্কা বাজিয়ে সবাইকে সতর্ক করে থাকে ৷ চাঁদের গায়ে রয়েছে উঁচু পাহাড় ও নিচু ভূমি ফলে চাঁদের রয়েছে অসংখ্য কলঙ্ক ৷ তার উপর কত কলঙ্কের বোঝা তার সইতে হয় ইহার কোন ইয়ত্তা নাই ৷ সূর্য এতই প্রখর যে কোন মলিনতা তাকে স্পর্শ করতে পারে না, সে সবকিছুকে জ্বালিয়ে ছাই করে দেয় ৷ কোমল হৃদয় চাঁদ সমস্ত কলঙ্ক নিয়ে নীরবে তা সহ্য করে দৈনন্দিন সূর্যের প্রখর তাপকে হজম করে নিজে স্নিগ্ধ আলো দান করে মানুষের ভালবাসার ইন্ধন যোগায় ৷ সেই স্নিগ্ধ আভা, কোমল আলো হৃদয়ের কোণে জমাট-শক্ত পাথরকে গলিয়ে শিশিরবিন্দুতে পরিণত করে এবং মনের ভাবকে চোখে ও মুখে নিয়ে আসে ৷
কুহকিনীর অভ্যাস এবং স্বভাবগত যে কর্ম তা নেহায়-ৎ ভাল এর মধ্যে গণ্য করা না গেলেও একেবারে খারাপ বলা যায় না ৷ সে নিজে ভোগ করে, এ অভ্যাস প্রায় সবার মধ্যে রয়েছে ৷ সুতরাং ইহাকে সমাজ যুগ অনুযায়ী গ্রহণ করিয়া লয় ৷ নিজে পাপকর্ম করে খারাপ অভিজ্ঞতা অর্জন কি কম গৌরবের বিষয়! অন্যকে সতর্ক করে দেয়া মানে সমাজকে বিপদের হাত থেকে রক্ষা করা ৷ ইহা গৌরবের বিষয় ৷ কিন্তু তা কি হয়ে থাকে ? সমাজ দুর্নীতি ও অবক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা পেলে দেশও রক্ষা পায় ৷ ইহার ভেতরে শান্তি বা ইসলাম ও গণতন্ত্র পাশাপাশি শোভা পেলে মন্দ নয় ৷ উন্নয়নশীল দেশগুলিতে এরূপ ঘটা অসম্ভব নয় ৷ নিজস্ব-নীতি ও খবর-দারী প্রথা দু মিলে বর্তমান চলতে থাকবে ৷
শান্তির ধর্ম কখনও নিজের দোষ অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দিতে সাহায্য করে না ৷ ইহাই একক শান্তির নীতি বলিয়া গণতন্ত্র ছাড়া সুষ্ঠুভাবে অনেক দূর চলা কেহ মানিয়া লইতে পারে না ৷ গণতন্ত্র পাশাপাশি থাকিলে তা হয়তো পারা যায় সমানভাবে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে যতক্ষণ দুধে জলে মিশে না যায় ৷ শান্তিতে দুধে পানি মিশানো অপরাধ কিন্তু গণতন্ত্রে সমান অধিকার বলে জল মিশানো যায় ৷ (চলবে)



বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন, ২০১৩

কোন কারিগর বানাইছে ঘুড়ি

কোন কারিগর বানাইছে ঘুড়ি
আবুলকালামআজাদবাসু

কোন কারিগর বানাইলে ঘুড়ি
চতুষ্কোণে বক্র রেখা বাঁশের ত্রিকোণ-
মধ্যখানে সরলরেখা বাঁশের খুঁটি
তুমি কোন মিস্ত্রি বানাইলে ঘুড়ি ৷
আকাশে উড়ায় রঙ বে-রঙের ঘুড়ি
দেখে মানুষের মন নাচে উরু উরু,
দুরুদুরু মন খিল খিলিয়ে হাসে ৷
মাষ্টার বলেছে ঘুড়ি আঁকতে
পরীক্ষা পাস করতে ছাত্রছাত্রী
তারা নিয়ে গেছে আস্তা ঘুড়ি আর পানের খিলি ৷
ড্রইং এ ব্যবসা জম-জমাট
মাষ্টার মশাই এবার কপালে দিয়েছে হাত;
সাথে গিয়েছে মাতাপিতা মাষ্টারকে খাওয়াবে খিচুড়ি ৷
কোন কারিগর রানইলে ঘুড়ি ৷
চতুষ্কোণে বক্র রেখা বাঁশের ত্রিকোণ-
মধ্যখানে সরলরেখা বাঁশের খুঁটি
তুমি কোন মিস্ত্রি বানাইলে ঘুড়ি ৷
মাতাপিতার চার সন্তান
সবাই নিয়ে গেছে নানান খোশ-খেলনা খেল-ঘুন্টি ৷
তারা পপি, নিশি, সুমা ও তিসি ৷
পপি বানাইছে সুস্বাদু খাবার
মাষ্টারের পছন্দসই তাও আবার
দীর্ঘ-কেশী নিশির পুতুল
সুমার আছে কারিগরি ঘুড়ি,
তিশির শ্রম দিয়ে বানানো মোমবাতি ৷
মাষ্টার মশাই এবার খাবে খিচুড়ি,
পরে দেখা যাবে তিনি কি চান,
পরীক্ষা পাশে কে বা পাবে ভাল নাম্বার?
মাষ্টারের পছন্দ কারিগরি ঘুড়ি ৷
পপি খিচুরি তালা হাতে দিয়ে পাঠাল সুমার ঘুড়ি
কোন কারিগর বানাইলে ঘুড়ি
চতুষ্কোণে বক্র রেখা বাঁশের ত্রিকোণ-
মধ্যখানে সরলরেখা বাঁশের খুঁটি
তুমি কোন মিস্ত্রি বানাইলে ঘুড়ি ৷
মাষ্টার খায় কেবল খিচুরি, আর দেখে
নেড়ে চেড়ে এ কি রকম ঘুড়ি
কোন মিস্ত্রি বানাইলে তারে
মন যে উরুউরু দুরুদুরু ৷
অন্য তারা পেছনে রয়েছে পাখনা খোল-
পেছনের রাস্তা অন্ধকার করে,
মাতার এসেছে ঘুম সদা ইহাই তাহার অভ্যাস,
তার গলার ঘণ্টা ঘুড়ি নিয়ে গেছে তথায়
মাষ্টার দেখে তা নিয়ে করে নাচানাচি ৷
ডাইনিং টেবিলে চলছে এই হুড়াহুড়ি
পিতা নন তবুও বসে আছে সুমা আসবে ফিরি,
মাষ্টারের নেই সনয় অন্যের খেলনা দেখার
তাড়াহুড়া করে অন্যের খেলনা ভরল ঝুড়ি ৷
পিতা নন তবুও এসে বলল সুমা তুমি আর যেও না,
সবার পীড়াপীড়ি মাষ্টার গেছে অন্য রুমে
হতাশ হয়ে গেছে পিতার তাণ্ডবে,
কেহ কেহ বলল সে কে তোমার!
উত্তরে বলল সে-ই অনেক বড় আমার জন্যে
বোনেরা করল পীড়াপীড়ি
অগত্যা বাড়াল পা সেই রুমে
ছুঁই ছুঁই বোনেরা দিল টান
আজও পিতা হয়নি এমন সে দিল বাধন বান ৷
দাঁড়াও যেও না আর,
এটাই বাধা হয়ে দাঁড়াল
যা করেছে সত্যি সেটা প্রশংসার যোগ্য
সে ফিরল আপন জায়গায় শুনে তান,
বলল এবার পিতা নন যিনি,
যাও, মাতার সাথে কর আলাপন
নিজ সত্তা এসে দেখে খুশী মনে
ঘুড়ি হাতে বসে আছে তার সখী
আপন মায়ের সনে গল্প গুজবে ৷
কোন কারিগর বানাইছে ঘুড়ি
চতুষ্কোণে বক্র রেখা বাঁশের ত্রিকোণ-ই
মধ্যখানে সরলরেখা বাঁশের খুঁটি
তুমি কোন মিস্ত্রি বানাইছ ঘুড়ি ৷
নতুন ফন্দি লোভ লালসায়
যদি আটকানো যায় আকাশে উড়াবে ঘুড়ি ৷
চতুষ্কোণে বক্র রেখা বাঁশের ত্রিকোণ-ই
মধ্যখানে সরলরেখা বাঁশের খুঁটি
তুনি কোন মিস্ত্রি বানাইলে ঘুড়ি ৷
অন্যটি সুমা নিজেই করেছে কৌশল
সরাতে মন বুঝে পরিস্থিতি,
সত্য প্রকাশিতে গাফলতি কুমতলবে ভরা
আবার যেন তা ফিরে পায় ৷
তার কথায় সদা যদি করে কর্ণপাত
অচিরে হারাবে হিতাহিত ৷





বুধবার, ২৬ জুন, ২০১৩

পিতা কালাম’ জন্ম কালো (২৮)

পিতা কালাম’ জন্ম কালো (২)
আবুলকালামআজাদবাসু


বিসমিল্লাহির রাহমানির রহিম
পরম করুণাময় আল্লাহর নামে ৷
দুরু দুরু প্রাণ যখনি শুনি এ গান,
সহসা কেন গৈবী গমন অনুবন্ধে,
পরোয়া যদি না হয় গৌরবান্বিতের,
এনু তত্ত্বজ্ঞানে রাখি প্রত্যুদাহরণ ৷
তোমার শোণিত মোক্ষণে হয় শোধন,
মোর এ জীবন দীর্ঘায়ু, বিশ্ববিধাতা ৷
প্রতিশ্রুতিতে নই কি বদ্ধ পরিকর ?
আমি সে-ই একাশ্রিত ঘরে মুগ্ধ রই,
আল্লাহর মসি তীর চলে যথা যেথা
কে করে বারণ? তা কৃষ্ণের আবরণ ৷




মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০১৩

মনুষ্য-পুত্র

      মনুষ্য-পুত্র
আবুলকালামআজাদবাসু

দখিনা হাওয়া যখন বয় সকালে
গাছের পাতা গজায় সমস্ত গাছে
গ্রীষ্মকালে তখন আসে; বৈশাখ মাসে
প্রভাতে আসল শিশু নুর-দ্বয় কোলে
শিশুর মাতা পিতা নাহি জানে এমন
কিছু, তাদের পুত্র সন্তান হবে যীশু ৷
নাম রেখেছে তার বাসু, শুরুতে বিষ্ণু
দখিনা হাওয়া বহিছে গরমকালে
পাতা গজায় গাছে গাছে, মনুষ্য-পুত্র
দুয়ারে, স্মরণ করে ঈশ্বর, ঈশ্বর
হাদিছ এ ঈসার আবির্ভাব ফজরে ৷
দখিনা হাওয়া যখন বয় সকালে
হৃদয়ে তখনই  কোমল ছোঁয়া লাগে
ঘুম থেকে উঠে ভোরে কায়মনোবাক্যে
মানব আল্লাহরে ডাকে করুণ সুরে
হাজির তখনি মনুষ্য-পুত্র দুয়ারে ৷


বুধবার, ১৯ জুন, ২০১৩

কৃষ্ণচূড়া ফুল

                 কৃষ্ণচূড়া ফুল
         আবুল কালাম আজাদ বাসু
কৃষ্ণচূড়া গাছে লাল রঙিন ফুল দেখে মন যায় ভরে
কৃষ্ণের মাথার চূড়ায় লেখা বাংলার চন্দ্রবিন্দু
তাঁরে মাথায় লয়ে সদা সাজে কৃষ্ণচূড়া ফুলের
রক্ত রঙিন আভা,
তুমি চিনলে না তারে তোমায় নিয়ে মনের বাসনা ৷
হে আমানত ! টুকটুকে টুকু টুকটুক রঙিন ফুল ৷
আমায় দিয়েছ বরাত যখন কৃষ্ণচূড়ায় বাঁশি দিয়ে
হাঁক দিয়েছিলাম বাগান সাজাতে মর্তে
সাড়া দিয়েছিলে কায়া-বিহীন ঐ শর্তে
কোথায় লুকাবেন সে এই বিশাল ভূ-তে!
কে আসিবে ঘরে দি-গাঙ্গিনী অরূপ এ কাহিনী ৷
ধরা দিলে শেষে বীরাঙ্গনা বেশে জান না ভেদ
একদা অরূপের সাথে হবে মম দরশন
তথায় তোমার কায়া, নহ তুমি একা সাথে
কৃষ্ণের মাথায় আছে এক অরূপ লেখা
তাঁরে বিনা হয়না শান্ত মোর কত যে ব্যথা ৷
কদম তলায় বাজাব বাঁশি সূরে সূরে
যদি পাই তাঁর কখনও  দেখা !
কে বা আমি নাহি জানি তবে তোঁমায় জানি ৷
কৃষ্ণচূড়া গাছে লাল রঙিন ফুল দেখে মন যায় ভরে
কৃষ্ণের মাথার চূড়ায় লেখা বাংলার চন্দ্রবিন্দু
তাঁরে মাথায় লয়ে সদা সাজে কৃষ্ণচূড়া রক্ত রঙিন আভা
তুমি চিনলে না তারে তোমায় নিয়ে মনের বাসনা ৷






মঙ্গলবার, ১১ জুন, ২০১৩

বিশ্ব দরবার

বিশ্ব দরবার
আবুলকালামআজাদবাসু

বিশ্ব দরবার মাঝে মাথা করিয়া উঁচু
বলি আমি, প্রকৃতি বলে আমায় যিশু,
আমার মাঝে বিদ্যুৎ প্রবাহ চমকায়ে
প্রকৃতির শক্তি করিল উর্বর, চাঙ্গা
মনে উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে হয়েছি
হাজির, প্রকৃতি বলে যে আমায় যিশু
আমিই কালামের আলফা ও ওমেগা
আমিই কালাম, নামে নাহি আছে যশ
গরব নয়, পরম পাওয়া মানব
মানবের রূহ যায় চলে তাঁর ঘরে,
তাঁহারে স্মরি কবিতায় নির্জনে বসে ৷
ক্ষুধা তৃষ্ণা করি নিবারণ সব ভুলে,
তাঁহারি তুল্য নাহি আছে কেহ যে আর
একথা ভাবি দমে দমে সহস্রবার ৷