শয়তানের
ডায়েরী নয় তবে (৪)
আবুলকালামআজাদবাসু
তোমার নাম উচ্চারণের আগে আমাকে কি যেন পড়তে বলা হয়ে ছিল ৷ মনে পড়েছে ‘তা’আউয’ অর্থাৎ আউ’যুবিল্লাহি মিনাশ
শাইত্বোয়ানির্ রাজীম ৷ অভিশপ্ত শয়তান হতে আল্লাহর
নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করিতেছি ৷ জনাব, আমার কথা লিখবেন আবার আমাকে দূরে সরাইয়া দিচ্ছেন
তাহলে পরশ্পর আলাপ চারিতা কি ভাবে হবে? তোমার কথা শুনে আমাকে হতবাক না হয়ে উপায় কি
৷ আগে বল তুমি কোরাআণের বাণী সমূহ বিশ্বাস কর কিনা ? সেটার জবাব দিব না তবে মিথ্যা
নয় ৷ তাহলে বল তুমি আগে বিতাড়িত হয়েছ না আদম ? সেটা তো জানা কথা শয়তান আগে বিতাড়িত
হয়েছে তবে আমি পরোপকারী ৷ আমি সব সময় সত্য
প্রকাশ করি ৷ আগে বল দুজন এই তোমরা আদম পরিবার এবং তুমি ভিন্ন ভিন্ন স্থানে থেকে কিভাবে
সখ্যতা গড়ে তোলেছ ৷ এইতো এই সব কথা বলবো না বলেই তো ওয়াদা করেছিলাম ৷ তাইতো মৌলানা
সাহবকে কিছু রেওয়াত গল্প কিচ্ছা কাহিনী শিখায়ে বড় করেছিলাম ৷ এই প্রশ্নের জবাব দিলে
মানুষকে আর ভুলানো যাবে না ৷ কাকেও বলেছি সর্প হয়ে নিকটে যেতাম, কাউকে বলেছি সীমানায়
গিয়ে ডাক দিতাম ৷ আজ আমি এই প্রশ্নের জবাব দিলে মানুষ আমাকে আর বিশ্বাস করবে না ৷ সবচেয়ে
বড় কথা আমার এক পত্নী আছে যে সর্প হতে ভালবাসে এমনকি সে সর্প থেকে মানুষের রূপ নিতে
পারে ৷ সে ধরা ছোঁয়ার বাহিরে অবস্থান করে ৷ আদমের সাথে আমার প্রতিনিয়ত কথা হত ৷ তবে আদমের চেয়ে তাঁ স্ত্রীর প্রতি মোহ কম ছিল
না ফলে সখ্যতা মূলতঃ তাঁর সাথে ছিল৷ আগে যদি এই প্রশ্নের জবাব জনে জনে ঠিকভাবে দিতাম
তাহলে হত কি? অনেক মানুষ আছে ঐ সর্প এবং আমার বলার কৌশল সবই জেনে যেত ৷ আমি বহু আগে
থেকেই চিনি যে আপনি বাস্তব ছাড়া বিশ্বাস করার লোক নন ৷ কারণ একজন এমন রোগী জিরোতে কথা
শুনেন এবং মধ্যে মধ্যে লিখেন ৷ কিন্তু মানুষ জিরোতে শুনে না ৷ এই যে কথা বলছি আর কেউ
কি শুনছে? আমি একটু আঁচ করতে পেরেছিলাম যখন আল্লাহর আদেশ ফেরেস্তাদের কাছে আসে ৷ পারবো
না কেন? আমি কি ফেরেস্তাদের সর্দার বা ইমাম ছিলাম না ৷ তাঁরা পরিষ্কার বুঝে আর আমি
অস্পষ্ট শুনতাম তবুও তখন সঠিকই শুনতাম ৷ আমার গর্ব তো ওখানেই কোরআনে আমার কথাই বেশী
লেখা হয়েছে আর আপনিই বা আমার ডায়েরী লিখবেন না কেন ? আমিতো মানুষের শিরা উপশিরাই যেতে
পারি ৷ কিন্তু যাব কেমনে ? অবশ্য আমাকে ধরার মত লোক নেই তবে আপনার আচার আচরণ আমার কাছে ভাল ঠেকাচ্ছে না ৷
কেন বুঝেন না? মানুষ জ্বিন
এর চেয়ে বুদ্ধিমান হল কেমনে ? বেতার যন্ত্র তো আবিষ্কার করেছেন ৷ আর আমি সেইদিন আল্লাহর
কাছে এই বেতার যন্ত্র চেয়ে নিয়েছিলাম ৷ যদি বিশ্বাস না হয় কোরআন ভাল করে পড়েন ৷ আমারও
সুর লহরী আছে ৷ জনে জনে গিয়ে এ সুর লহরী শুনাই না ৷ যারা শুনতে চায় কেবল তাদের ৷ আমার
অনুরোধ রইলো এমন কিছু পাঠ করবেন না যা আমার সুর লহরী না পৌঁছায় ৷ তখন আদমের বেলায় একটু
অসুবিধা ছিল ৷ তথায় আমার প্রতিনিধি পাঠাতে পারতাম না ৷ কেবল এই সুর লহরী দিয়ে আলাপ
এবং সৎ উপদেশ দিয়ে সব কিছুকে নীচে নামাইয়া এনেছি ৷ ফলে সব মানুষের মাঝে কেন পথে ঘাটেও আমার ভক্তের অভাব নাই ৷
কেবল ‘ইয়া হাফীজু’ এই নামটা
জপ করবেন না ৷ কারণ এই নাম লিখিয়া সঙ্গে রাখিলে পানিতে ডুবিয়া মরে না, আগুনে পুড়িবে
না ৷ বাঘ, ভাল্লুক, জ্বিন, ভূত-প্রেত কোন অনিষ্ট করিতে পারে না ৷ সুতরাং এই নাম আমার
এবং আমার জাতির জন্য অনিষ্টকর বিধায় এই নাম জপ্ করবেন না ৷ এখানেই আজ শেষ করি ৷
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন