আমার কথা প্রথম খণ্ড (১৭)
আবুলকালামআজাদবাসু
22/1/2013
কত অসহায় হতভাগা মোর মত
অকালে তারা ঝরে পড়ে কালের
অগ্রে,
সত্যে বিশ্বাস চল্লিশে
উপনীত হলে ৷
হিন্দু অহিন্দু, খৃষ্টান,
বৌদ্ধ, মুসলিম,
দর্শনে মানব এই তার পরিচয়
তদনিম্নে নাম ধাম বংশ
জাতি ধর্ম;
সত্য
উপলব্ধির পূর্বেই কত লোক মৃত্যু বরণ করেছে তার কোন ইয়াত্তা নেই ৷ আল্লাহ নিজেই
বলেছেন যে, কোরআনে ব্যক্ত করা হয়েছে যে প্রকৃত দৃঢ় প্রতিজ্ঞা বা তাঁর ভাবনা আসে
একজন লোক চল্লিশে উপনীত হলে ৷ তবে আল্লাহ যাকে হেদায়ত করেন তারা তারও পূর্বে
আল্লার কাছে আত্মসমর্পণ করেন ৷ আল্লাহর নির্দেশিত পথ একটাই, সেটা ইসলাম ৷ তবু সবাই
আল্লাহর বান্দা, আল্লাহর করুণা সবার নিমিত্তে রয়েছে ৷ মানব পরিচয় বংশ পরিচয়ের চেয়ে
অধিক মূল্যবান ৷ তাই মানব সেবা ধর্ম মত নির্বিশেষে মহৎ কর্ম বলে গণ্য হবে ৷ (হয়তো
আল্লাহর প্রতি বা তাঁর কাছে প্রার্থনা এইজন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যে কারণে
তাঁর প্রতি প্রেম ভক্তি আসক্তি জাগরিত হবে ফলে মানব প্রেম ও ভালবাসা ও মানব সেবাও
জাগরিত হয়ে উঠবে, বস্তুতঃ আল্লাহ কারও এবাদতের মূখাপেক্ষী নন ৷) উহা ছাড়া সব
ধর্মকে প্রাধান্য দিয়ে ইসলামে অন্তর্ভূক্ত করণ হয়তো বিশ্বে এ রচনা অনন্য ৷
“বল,
তোমার প্রতিপালকের নিকট হইতে রুহুল কূদ্স জিবরাঈল সত্যসহ কোরআন অবতীর্ণ করিয়াছে,
যাহারা মুমিন তাহাদিগকে দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত করিবার জন্য এবং হেদায়ত ও সুসংবাদস্বরূপ
আত্মসমর্পণকারীদের জন্য ৷” ১৬(১০২) কোরআন ৷
কথিত
এ সত্য ও সতর্ক সংকেত বাণী যা বর্ণিত হচ্ছে তা জিবরাঈল (আঃ) ফেরেশতা নিজ থেকে বহন
করে আনে নি বরং তাঁকে এ ব্যাপারে নিযুক্ত করা হয়েছে ৷ ইহাতে প্রকৃত সত্য নিহিত
রয়েছে, সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না; ইহা কেবল তাঁদের জন্য যারা মুমিন ৷ এ
বাস্তবতা নিজেদেরই বিবেচনা করতে হবে ৷ সত্যের দ্বার চিরজীবন উন্মুক্ত থাকবে ৷
মানুষের যুক্তি তর্কের ঊর্ধ্বে যিনি তাঁর অসীম ক্ষমতার কথা বর্ণনা করে তা কোনরূপ
যুক্তি তর্কের আওতায় আনা যায় না ৷ অধম আরবী শিক্ষায় দীক্ষিত নয় বিধায় কারও সাথে সে
ভাষায় যুক্তি পেশ করার পটুতা রাখি না বলে পাঠক পঠিকার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী ৷
“ইহা
এই জন্য যে, তিনি সত্যকে সত্য ও অসত্য অসত্য প্রতিপন্ন করেন, যদিও অপরাধীগণ ইহা
পছন্দ করে না ৷” ৮(৮) কোরআন ৷
পূর্বাপর
আয়াত সমূহের অর্থ ভিন্ন খাতে ব্যক্ত হলেও সহজ অর্থে এ সব আয়াত উদ্ভুত হয়েছে যাতে
মূখ্য বক্তব্য সমূহ সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা যায় ৷ কোন কোন জ্ঞানীদের ধারণা আল্লাহ
এ সব সৃষ্টি করেই কোন হিসেব ব্যতীত চুপচাপ তাঁর আসনে বসে সব অবলোকন সবকিছু অবলোকন
করছেন ৷ ইহা সম্পূর্ণ ভুল কথা ৷ যিনি প্রতিপালক তাঁর হিসেবে কোন ভুল নেই বরং তিনি
বসে নেই ৷ কোন কাল যখন পূর্ণ হয় তখনই তিনি তখনই তিনি আনায়ন করেন আর এক কাল,
মানুষকে দিয়ে ‘মসির’ সহায়তায় রচনা করান ধারালো অস্ত্র, ‘শক্তি’ যাহা দ্বারা মিথ্যা
দাবীকারকের সমস্ত দাবীই লণ্ড ভণ্ড হয়ে যায় ৷
“স্মরণ
কর, যখন ফেরেশতাগণ বলিল, ‘হে মরিয়ম! আল্লাহ তোমাকে তাঁহার পক্ষ হইতে একটি কলেমার
সুসংবাদ দিতেছেন ৷ তাহার নাম মসীহ মারয়ম তনয় ঈসা, সে ইহলোকে ও পরলোকে সম্মানিত’
এবং সান্নিধ্য প্রাপ্তগণের অন্যতম হইবে ৷” ৩(৪৫) কোরআন ৷
কোনআনে
উল্লেখ আছে যে, মরিয়ম (আঃ) যখন পূর্বদিকে অগ্রসর হচ্ছিলেন তখন ফেরেশতা উপস্থিত হয়ে
তাঁকে ‘কলেমার’ সুসংবাদ দিলেন অর্থাৎ মসীহের আগমন বার্তা শুনালেন ৷ তাঁকে
‘কালামুল্লাহ’ নামেও অভিহিত করা হয়েছে ৷ মসীহ ও কলেমাতুল্লাহ যেমন কোরআনে উল্লেখ
করা হয়েছে তেমনি তা ইঞ্জিলেও উল্লেখ করা হয়েছে ৷ (মসীহ নামের বিভিন্ন অর্থ রয়েছে
যেমন বাদশা বা রাজা, যে অর্থই করা হোক না কেন তা তাঁর জীবদ্দশায় পূরণ হয় নি ৷) মসি
অর্থ বাংলায় ‘কলম’ আর এই কলমের বিশেষ অর্থ ব্যতীত কোন ঘটনা শেষ করা যায় না ৷ মানুষ
যা সত্য বা মিথ্যা রচনা করে তা মসি দ্বারা সম্ভব হয়ে উঠে ৷ কিছুদৃর অগ্রসর হলেই
পাঠক পাঠিকা দেখতে পাবেন যে, মির্জা কাদিয়ানী নিজেকে কলমের সম্রাট বলে দাবী
করেছেন, এবং তার তুল্য এ ধরায় কেউ নেই বলে মিথ্যা দাবী ছুঁড়ে দিয়েছেন ৷ (অথচ কলম
শব্দটির সাথে সেই ভাষায় মসি শব্দের কোন সামঞ্জস্য নেই ৷) এক্ষণে বেশী কিছু না বলে
কেবল বলা যায় মসি দ্বারা মিথ্যা বানোয়াট উপাখ্যান, রূপকথা, গল্প রচিত বলে মির্জাকে
‘কলম মির্জা’ বললে অতুক্তি হবে বলে মনে হয় না ৷ তাই তাকে মসিহ গোলাম আহমদ কাদিয়ানী
বলা যায় তার উপাধি অনুসারে ৷ উহার কারণ হিসেবে বলা যায় তার যুক্তি গুলো ধর্মীয়
শাস্ত্রের অনুকূলে নয় ৷ যদিও তাদের দাবী মতে সেগুলো যথাযথ ৷ বেশিরভাগ যুক্তিই তার
স্বপ্রণোদিত উক্তি ছাড়া আর কিছুই নয় ৷
“তুমি
কখনও মনে করিও না যে, জালিমরা যাহা করে সে বিষয়ে আল্লাহ গাফিল, তবে তিনি উহাদিগকে
সেই দিন পর্যন্ত অবকাশ দেন যে দিন তাহাদিগের চক্ষু হইবে স্থির ৷” ১৪(৪২) কোরআন৷
সাধারণভাবে
বুঝা যায় যে, শয়তান যখন কিয়ামত অবধি অবকাশ পেয়েছেন তখন যারা জালেম সম্প্রদায় তারা
যদি ওহীপ্রাপ্ত হবার কথা মিথ্যার সাথে প্রচার করতে থাকে তাহলে তাদের কেন অবকাশ
দিবেন না? ইহাতে আশ্চার্য হবার কিছু নেই ৷ তবে এ সন্মন্ধে আল্লাহ সম্যক জ্ঞাত আছেন
৷ (মিথ্যা ওহী দাবীদার মির্জা দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার কারণে তার ভক্তরা
আশ্চার্যন্বিত হয়েছেন) এ কর্ম যতই ভাল বা খারাপ হোক না কেন সত্য যা তা বলা প্রয়োজন
বোধ বলে মনে করছি ৷ পাঠক সমাজই তা বিবেচনা করবেন ৷ “হে খোদা একজন অজ্ঞ, পাপী
দ্বারা তোমারই নির্ণীত মসিকে সম্মুখপানে কিভাবে পরিচালনা করি ! তুঁমি শক্তি প্রদান
কর যাতে জালিম মিথ্যুকের বেমানান যুক্তিগুলোকে সত্য দিয়ে আঘাত করতে করতে চূর্ণ
বিচূর্ণ করে তোঁমার সমর্থনে সত্যের ইতিহাস রচনা করতে পারি ৷ এ সামর্থ্য তুঁমি
অর্পণ কর ৷ আমিন ৷