আমার কথা প্রথম খণ্ড (৫)
আবুলকালামআজাদবাসু
(২১) মুসলমান সব নবীরাসূলদের স্বীকার করে, অদৃশ্যে বিশ্বাস
করে, নবী রসূলদের মাঝে ভেদাভেদ সৃষ্টি
করে না, কিন্তু নবীরাসূলদের মাঝে হযরত (সঃ) শ্রেষ্ঠ ও শেষ নবী এবং রসূল এ কথা বিশ্বাস করে ৷
(২২)
প্রত্যেক নবী রসূল এমনকি প্রত্যেক মানবের
‘জীবন বই’ রয়েছে ৷
(২৩)
সব নবী রসূলদের কাছে আসমানি কিতাব, ছহিফা নাযিল বা স্বপ্ন যোগে আদেশ নির্দেশ দেয়া
হয়েছে ৷ এসব আল্লাহর কালাম ৷
(২৪)
পাককোরআন আল্লাহর মূলগ্রন্থ ৷ সর্বশেষ নবীর আগমনে পাককোরআনও আল্লাহর সর্বশেষ পবিত্র গ্রন্থ ৷
(২৫)
ঈসা (আঃ) সর্বশেষ আগমনকারী ব্যক্তি
উম্মতে মোহাম্মদী এবং সব নবীগণের উম্মত (ঈসারূহুল্লাহ) ৷
(২৬)
ধরাধামে নবী (আঃ) গণ পুনর্জন্ম লাভ করে মোহাম্মদী জগতে ভ্রমণ করে আল্লাহর নৈকট্য লাভ
করেন এবং কর্তব্য কর্ম সম্পাদন করার নিমিত্তে অবতরণ করেন
অন্যদিকে আরিফ, আম্বিয়া, অলি-আউলিয়া,
বুজুগার্নেদ্বীন ও অন্যান্য ধার্মিক
ব্যক্তিগণ আরোহণ করেন এবং তার মাঝে কেউ
কেউ যিনি যতটুকু নৈকট্য হাসিল করতে পারেন তা নিয়ে শরীয়তের খেদমতের অনুসন্ধানে অবতরণ করে থাকেন ৷
(২৭)
সঙ্কোচনের মাধ্যমে কেয়ামতের পূর্ণ আলামত শুরু হবে ৷ সে স্থানে কেয়ামত অনুষ্ঠিত হবে
যে স্থানে আদি পিতা আদম (আঃ) ও সকল-জাতি একসাথে বাস করতো ৷ তাতে চল্লিশ দিন বা চল্লিশ হাজার বছর সময় লাগতে পারে ৷
(২৮)
অণুর মৌলিক সত্তা বিদ্যমান, অণু
যখন পরমাণুতে বিভাজন হয় তখন সত্তা-হীন হয়ে পড়ে, সে আরও শক্তিশালী হয়, এমনকি পৃথিবীকে ধ্বংস
করার শক্তি অর্জন করে থাকে ৷ সে তখন তার
আমিত্ব হারায়ে ফেলে ৷ সে কার ? সে পরিচয়
থাকে না ; সাধক যখন এ অবস্থায় উপনীত হয় তখন তার আর ‘আকার-রূপ’ অস্তিত্ব থাকে না ৷
এ অস্তিত্বহীনদের মালিক আল্লাহ অস্তিত্ববান একমাত্র সত্ত্ব, তিঁনি আকার ও অস্তিত্বহীনদের
মালিক বিধায় তিঁনি সদা নিরাকার ৷ সাধকগণ এরূপ স্থানে উপনীত হলে জাতিভেদ তাঁদের
মধ্যে আর পরিলক্ষিত হয় না ৷
(২৯)
প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সব ধর্মের লোক এক আল্লাহতে বিশ্বাসী ৷ এতে কলেমার প্রথম
অংশ পূরণ হয় বিধায় মানুষের ভেদাভেদ সৃষ্টি না করে জ্ঞান দিয়ে সবাইকে উপলব্ধি করা
প্রয়োজন ৷
(৩০)
যুদ্ধ কোনো কালে স্থায়ী সমাধান দিতে পারেনি ৷ সমঝোতার ভিত্তিতে স্থায়ী সমাধান আশা
করা যায় ৷ কোনও জাতিকে নিশ্চিহ্ন করা
মহান আল্লাহর কাজ, এ নিয়ে সংঘাত, হত্যা, গুপ্তহত্যা, যুদ্ধবিগ্রহ কোনাটাই আল্লাহর নির্দেশিত পথ নহে যখন পর্যন্ত এক জাতি অন্য আর এক জাতির উপর জোর করে যুদ্ধ চাপায়ে
না দেয় তখন পর্যন্ত ধৈর্য ধারণ করাই
শ্রেয় ৷ বরং যুদ্ধ হবে মুসলিম ও অমুসলিম মাঝে এ নিয়ে যে, কোরআন ও বিজ্ঞান বিষয়ক
তথ্য নিয়ে এবং প্রতিটি ধর্ম সম্পর্কে প্রতিদিনের খবরের কাগজে কমপক্ষে একটি পৃষ্ঠা
বিশ্বময় প্রচার করাই হবে দু দলের প্রধান কাজ৷ উহাই স্থায়ী সমাধানের পথ বের করে
আনবে ৷
(৩১)
প্রত্যেক ধর্মে প্রেম ভালবাসা, আল্লাহর প্রেম সৃষ্টির কথা হলেও তাঁর প্রকৃতস্বরূপ
ব্যাখ্যায় কেউ আকারহীনকে ভালবেসে কেবল তাঁর বাহ্যিক দৃশ্যাবলী উপভোগ করে ৷ অন্য কেউ
আকারকে স্থান প্রদান করে খেলা করতে করতে প্রেম নিবেদনের মাধ্যমে আল্লাহর প্রেম
জাগিয়ে তোলে যদিও তা আল্লাহর পছন্দনীয় নয় ৷ সব ধর্ম মাঝে সত্য যে রয়েছে তা কেবল
জ্ঞান দিয়ে উপলব্ধি করতে হবে ৷ ইসলাম ধর্মে আকারের স্থান নেই, তবুও সূফীতত্ত্ব এদিকটা তেমন প্রাধান্য দেয় না ৷
(৩২)
যে সব জাতি নিশ্চিহ্ন হবার কথা হাদিছে উল্লেখ রয়েছে, সে সব আপনা থেকে বিলুপ্ত হতে থাকবে
আল্লাহর কুদরতে এবং অনেকেই বরফের মত গলে যাবে আন্তরিক প্রেম ও ভালবাসার স্পন্দনে এবং
বন্ধনে ৷
(৩৩)
পণ্ডিত ব্যক্তিরা যখন স্বীকার করবেন যে, প্রত্যেক ধর্মে সত্য ছিল এবং শেষ ধর্ম
শান্তির ধর্ম, একব্যক্তিই আল্লাহর কুদরত বলে নিজেকে সব ধর্মমতে যুক্তি এবং সত্যসহ
প্রকাশিত হয়ে পড়বে, তখন তারা বিনা দ্বন্দ্বে তা গ্রহণ করবেন ৷
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন