পূর্বাভাস
ঈসা (আঃ) এর আবির্ভাব সম্পর্কিত হাদিছ গুলোর বর্ণনা অনুযায়ী ২১টি বিশুদ্ধ হাদিছকে একত্রীকরণ করা হয়েছে ; প্রায়
দু-শতেরও অধিক হাদিছ তাঁর আগমন উপলক্ষে বর্ণনা করা হয়েছে:- “হযরত ঈসা (আঃ) ফেরেশতা-দ্বয়ের পাখার উপর ভর দিয়ে অবতরণ
করবেন, দুটি রঙিন চাদর পরনে থাকবে, হযরত (সঃ) স্বপ্নে দেখলেন,
তিনি (ঈসা) দু-ব্যক্তির কাঁধের উপর ভর করে বায়তুল্লাহ তওয়াফ করছেন (বোখারী শরীফ হাদিছ নাম্বার ৩৫৯২); তিনি অবতরণ করবেন
দামেস্ক শহরের পূর্বাংশে অবস্থিত মসজিদের পূর্বেকার সাদা মিনারের উপর ৷ নিশ্চয় জানিও
ঈসার মৃত্যু হয়নি এবং কিয়ামতের নিকটবর্তী সময় ফজর (অন্য হাদিছে) বা আছরের সময়ে অবতরণ করবেন ৷ তিনি
ফয়ছালাকারী-রূপে ও ন্যায় প্রতিষ্ঠাকারী-রূপে যুদ্ধের অবসান করবেন ৷ তখন দজ্জাল
চতুর্দিকে উৎপাত বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে, সে মতে তিনি খৃষ্টানদের কুসংস্কার মুছবার,
ক্রুশ ভাঙ্গবার, শুকরকে যে গৃহপালিত পশু-রূপে গ্রহণ করেছে তা উচ্ছেদ করবার অভিযান
চালাবেন ৷ পরে তিনি নামাযে দাঁড়াবেন এবং তাঁকে বলা হবে, হে আল্লাহর
রূহ! আসুন ইমামতই করার জন্য, কিন্তু তিনি বলবেন, ‘না’ তোমাদের ইমামের আগায়ে আসা উচিত, সে-ই নামাজ
পড়াবে ৷ ‘কিতাবিদিগের মধ্যে প্রত্যেকে তাহার মৃত্যুর পূর্বে
তাহাকে (ঈসাকে) বিশ্বাস করবেই’ ৪(১৫৯) কোরআন, ‘এর অর্থ হযরত ঈসা (আঃ) এর মৃত্যুর পূর্বে এ বাক্যটি তিনি হযরত (সঃ) তিনবার
উচ্চারণ করেন ৷ তিনি মস্তক অবনত করলে পানির ফোঁটা পড়বে মনে হবে এখনই গোসল
করে এসেছেন, মস্তক উঁচু করলে মোতির মতো স্বচ্ছ পানি বয়ে পড়বে ৷ তাঁর শ্বাস
প্রশ্বাস যে কাফেরের গায়ে লাগবে সে সেখানেই মরে যাবে ৷ তাঁর সে প্রশ্বাস তাঁর
দৃষ্টির সমান দূরত্বে পৌঁছবে, নামায হতে অবসর হলে মুসলমানেরা দজ্জালের সাথে
মোকাবিলা করার জন্যে বের হবে ৷ সে (দজ্জাল) মিথ্যাবাদী, হযরত ঈসাকে (আঃ) দেখে
লবণের মতো পানিতে গলে যাবে ৷ পরে তিনি তার দিকে অগ্রসর হয়ে তাকে হত্যা করবেন এবং
দজ্জালের অনুসারীরা কেউই বাঁচবে না, তিনি সবাইকে কতল করবেন ৷ গাছ ও পাথর চিৎকার
করে উঠবে, হে আল্লাহর রূহ! এ ইহুদীটা আমার পেছনে লুকায়ে আছে ৷ ঐ সময়
ধন দৌলতের আধিক্য হবে, গ্রহণকারী পাওয়া যাবে না, সামান্য এবাদত যথা একটা সেজদা
সমস্ত সম্পদ সামগ্রী হতে উত্তম গণ্য হবে ৷ কতই না সুন্দর হবে তোমাদের অবস্থা
তোমাদের মধ্যে অবতরণ করবেন মরিয়ম পুত্র ঈসা এবং তোমাদের ইমাম তোমাদের মধ্য হতে হবে
৷”
(বোখারী শরীফ ১৬৫৬
ও ১৬৫৭ নং তফসির ইবনে কাছির, রুহুল
মাযানী ইবনে জবীর, মারে-ফুল কোরআন ২য় খণ্ড ৬৬-৬৭ পৃষ্ঠা,
মোসলেম শরীফ ২য় খণ্ড ৪০১-৪০২ নং তফসির কুরতুবী, বোখারী শরাহ্
ফয়জুল বারী ৪র্থ খণ্ড ৪৬ পৃষ্ঠা, তাফহীমূল কোরআন ১৬৬ পৃষ্ঠা, পাক-কোরআনের আয়াত ৪(১৫৯),
তফসির কুরতুবী) ৷
কলমের (মসির) সম্রাট মীর্জা গোলাম আহমদ
কাদিয়ানী তথা ‘আহমদ জামাতের’ ভিত্তি প্রস্তর যে বালির উপর প্রতিষ্ঠিত তা প্রমাণ
করার উদ্দেশ্যে আমি আমার নিজের জীবন বৃত্তান্ত, দিন, মাস,
জন্মসাল ইত্যাদি পাক-কোরআনের আয়াতের আলোকে, ইঞ্জিলের আয়াতের দর্শনে, ইসরাইল রাষ্ট্র গঠন সম্পর্কিত হাদিছের
দৃষ্টি-বিজ্ঞানে, ইঞ্জিলের আয়াতের বর্ণনায়, কলি অবতার, মৈত্রেয় বুদ্ধ, যরাথ্রুষ্ট,
ঈসা মসিহ, বা ইমাম মেহেদী আগমনের বার্তা স্ব স্ব ধর্ম মতে প্রকাশিত হওয়ায় নিজেকে
তা কিনা; প্রশ্ন উত্থাপন করে যথা সম্ভব যুক্তির মাধ্যমে ইঞ্জিলের প্রকাশিত কালামের
আদি ও অন্ত ধরে, যে রূপে বর্ণিত হয়েছে সেরূপে পাক-কোরআনের আদি ও অন্ত অক্ষর-দ্বয় দিয়ে যা কোনও কালে কোন মানবের রচনা দ্বারা সম্ভব হয় নি,
তা আমার বাল্য-নাম ‘বাসু’ থেকে কৃষ্ণ, ‘স’ ও ‘ব’ থেকে
সিদ্ধার্থ বুদ্ধ এর সাথে জড়িত করে এক উপমা পেশ করেছি, যেমন সাম-বেদে’
দেবতা নামের প্রথম অক্ষর ‘ম’ এবং শেষ অক্ষর ‘দ’ মোহাম্মদ (সঃ) (‘মাসিক মঈনুল
ইসলাম’ মে ৯৯ইং মওলানা ওসমান গণী হাজী-পুরী) ৷ হাদিছে বর্ণিত উপরোক্ত বিবরণ মোতাবেক দৃশ্যে ও অদৃশ্যে অনুরূপ
বর্ণনা পেশ করতে সক্ষম হয়েছি কিনা তা গবেষণা এবং হৃদয়ঙ্গম করার জন্যে এবং সেই
সঙ্গে দজ্জালের মূল উৎপাটন ও অন্যান্য প্রসঙ্গ সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পেরেছি কিনা
তা নিরূপণ করার জন্যে বিনীত অনুরোধ রইলো ৷
(আবুলকালামআজাদবাসু)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন