বৃহস্পতিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১২

আমার কথা প্রথম খণ্ড (১০)


আমার কথা   প্রথম খণ্ড (১০)
আবুলকলামআজাদবাসু
15/11/2012
প্রথম খণ্ড
প্রথম অধ্যায়   
“বিসমিল্লাহির রাহমানির রহিম” ৷
প্রশ্ন মোর সদাশয় খতিবের তরে
বাহাই কাদিয়ানী কি হালতে রুখিবে?
মুসার লাঠ্যৌষধি বিনা ফণীর ফণা
শুধু গাঁথা কথায় হবে না নিবারণ
কালের বিবর্তনে ঈসার প্রয়োজন ৷
অভয়-দানে করি রচন মোর কথা
ডাক্তার নই, তথাপি এ ব্যবস্থা-পত্র
প্রেসক্রিপশনে হবে না কেউ অমর ৷

আল্লাহর নামে এ কিতাবের প্রারম্ভে কাব্যের কিছু কিছু অংশ তুলে ধরা হয়েছে যাতে বোধাতীত এমন কিছু রহস্য রয়েছে যা সহজে উপস্থাপন করা সম্ভব হয় ৷ সবার আগে
এমন কতগুলো প্রশ্ন মনে উত্তাল পাতাল ঢেউ খেলে, তা  বিজ্ঞজনদের কাছে  জানতে সাধ হয় বর্তমান বিশ্বে যে ভাবে মিডিয়ার মাধ্যমে অপ-প্রচার চলছে  তা  প্রতিরোধ  কিভাবে সম্ভব ? সবাই জানে কোরআন হাদিছে হযরত ঈসা (আঃ) সম্পর্কিত অনেক বাণীই প্রচার করা হয়েছে তা সত্ত্বেও অপ-ব্যাখ্যাকারীর দল তাদের স্ব স্ব মতামতের ভিত্তিতে মানুষকে ঠকিয়ে তাদের ভুল ব্যাখ্যা সমূহ প্রাণবন্ত করে তুলতে অপ-চেষ্টায় লিপ্ত আছেন তাই মনে হচ্ছে কালের বিবর্তনের ফলে হযরত ঈসা (আঃ) এর আবির্ভাব প্রয়োজনে শ্রদ্ধার সাথে গ্রহণীয় কেবল অভয় দান করা হলে বক্তব্য আরও  প্রস্ফুটিত করে লোক সম্মুখে আনা যায় বহুদিন ধরে সমাজের শীর্ষস্থানীয়  বিজ্ঞ জনেরা কতিপয়  অপ-ব্যাখ্যাকারী সম্পর্কে লেখালেখি করলেও তার ফল বিশেষ কিছু হচ্ছে না, কারণ তাঁরা (বিজ্ঞজনেরা) প্রতিপক্ষ একজনকে এ ব্যাপারে দণ্ডায়মান করতে পারছেন না ৷ আজ একজন বিশেষজ্ঞ না হয়েও বিশ্বে এমন এক ব্যবস্থা-পত্র জনগণের হাতে তুলে দিতে চাই যেটার মধ্যে রয়েছে মুসা (আঃ) এর লাঠি এবং এ লাঠি, লাঠ্যৌষধি রূপে কাজ করবে ৷
কোরআনে প্রতিটি সুরার প্রারম্ভে, “বিসমিল্লাহির রাহমানির রহিম” আছে একমাত্র সুরা ‘তওবা’ ব্যতীত ৷ অনেকেই এ আয়াতকে সুরার অংশ বলে গণ্য করে থাকেন ৷ উক্ত আয়াতের বৈশিষ্ট্য এই যে, ১৯ অক্ষর সম্বলিত এ আয়াত, ইহার মোট সংখ্যা দিয়ে কোরআনের যে কোন কিছুর সমষ্টিকে বিভাজন করা যায় ৷ এ সূত্র বাহাই সম্প্রদায়ের বাহা-উল্লাহ নামক ব্যক্তি আবিষ্কার করেন এবং নিজেকে ইমাম মেহেদী বলে দাবী করেন ৷ তার এ সূত্রের ‘বিসমিল্লাহির’ প্রথম অক্ষর ‘ব’ হতে বাহা-উল্লাহ বলে তাদের ধারণা ৷ কেবল ‘বিসমিল্লাহির’ নয় বরং সেই সূত্র থেকে ‘ব’ অক্ষর ‘বাসনা’ জগতেরও কল্পিত করে ‘বা’ দ্বারা প্রাচ্যের সকলকে পাক-কোরআনে স্থান দেয়া হয়েছে কেবল আমার জীবন বৃত্তান্ত অনুসারে ৷
“আলিফ লাম মীম ৷ ইহা সেই কিতাব; ইহাতে কোন সন্দেহ নাই; মুত্তাকীদের জন্য ইহা পথ-নির্দেশ ৷ যাহারা অদৃশ্যে বিশ্বাস করে, সালাত কায়েম করে, ও তাহাদিগকে যে জীবনোপকরণ দান করিয়াছি তাহা হইতে ব্যয় করে এবং তোমার প্রতি যাহা অবতীর্ণ হইয়াছে ও তোমার পূর্বে যাহা অবতীর্ণ হইয়াছে তাহাতে যাহারা বিশ্বাস করে ও পরকালে যাহারা নিশ্চিত বিশ্বাসী ৷ তাহারাই তাহাদের প্রতিপালকের নির্দেশিত পথে রহিয়াছে এবং তাহরাই সফলকাম ৷ ২(১-৫) বাকারা, কোরআন ৷
এই আয়াতগুলো  কাদিয়ানী জামাত ব্যাখ্যা করে যে বক্তব্য পেশ করেছেন, তার জবাব দ্বিতীয় খণ্ডে দেয়া হয়েছে ৷ তবুও সংক্ষেপে এখানে উল্লেখ করা হচ্ছেঃ-
পাক-কোরআনের ঘোষণা অনুযায়ী বলা যায় যে, (১) অদৃশ্যে বিশ্বাস করা (২) সালাত কায়েম করা (৩) জীবনোপকরন হতে ব্যয় করা (৪) পাক-কোরআন এবং তাঁর প্রতি যে সমস্ত হাদিছ বা স্বপ্ন অ-লিখিতভাবে নাযিল হয়েছে তারও ইঙ্গিত রয়েছে (৫) পূর্বে যে সব কিতাব গুলো নাযিল হয়েছে তার উপর বিশ্বাস করা  এবং (৬) পরকালকে বিশ্বাস করা অপরিহার্য; তাঁরাই মোত্তাকি, আল্লাহর নির্দেশিত পথে রয়েছে ৷
কাদিয়ান সম্প্রদায় মতে, (১) অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতে ঐশী-বাণী প্রাপ্তদের স্বীকার করা (২) সকল ঐশী-বাণী প্রাপ্তদের নবী বলে স্বীকার করা (৩) ধারাবাহিক নবুওত-বাদ অস্বীকারকারীরা ‘মুশরিক’ (৫) অতীত এবং বর্তমান ওহী-প্রাপ্তদের নবী এবং নবুওতের
ধারায় বিশ্বাসী ব্যক্তিরা মোত্তাকি ৷
কবি সাহিত্যিক, নাট্যকার, গীতিকার বা যাদের উপন্যাস রচন করার শখ তারাই কেবল সুন্দর রচনাবলী পাঠক সমাজকে উপহার দিতে পারে ৷ কিন্তু এ লেখা ব্যতিক্রমধর্মী ৷ কারণ লেখালেখির ব্যাপারে আদৌ অভ্যস্ত নই ৷ কালের বিবর্তনে দেখা গেল যে, একটি পুস্তক রচনা ব্যতীত জীবনের পূর্ণতা আনয়ন করা অসম্ভব ৷  প্রথমত: ১৯৮৫ সালে স্বপ্নাদিষ্ট যথাযথ রূপ প্রদান করা এবং গবেষণালব্ধ ফলাফল অন্যের কাছে জ্ঞাত করা না হলে নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্যের প্রতি গাফিল হবার দোষে এ কর্ম হাতে নিতে হয়েছে ৷ এই বইয়ে অনেক কোরআনের আয়াত লিপিবদ্ধ করা হয়েছে তৎমধ্যে কিছু কিছু আয়াত প্রাসঙ্গিক আবার কিছু আয়াতও রয়েছে যা অপ্রাসঙ্গিক ৷ গ্রন্থের কলেবর একটু বড় হলেও উহার পেছনে ব্যক্তিগত মহৎ অভিপ্রায় নিহিত রয়েছে ৷ কিতাবের শেষ খণ্ড পাঠক সমাজে উপস্থাপন না করা পর্যন্ত মনে লুক্কায়িত সুপ্ত গুপ্ত কথার সারমর্ম হয়তো অনেকেরই বোধগম্য হবে না, এ প্রসঙ্গে বলতে চাই যে, মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী যিনি একাধারে ঈসা মসিহ এবং ইমাম মেহেদীর দাবীদার তিনিও প্রাথমিক অবস্থায় নিজেকে শতাব্দীর মোজাদ্দেদ রূপে আত্ম প্রকাশ করেন ৷ পরে দেখা গেল যে, সে-দাবী ব্যতিরেকে তিনি অন্যান্য নবী-দাবী কারকরূপে স্থান করে নেয় ৷ সে আশঙ্কায় শেষ খণ্ড প্রকাশিত হবার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত আল্লাহ যেন আমাকে ক্ষমা করেন এ পথ থেকে যে, ঈসা (আঃ) জীবনী নিজের সাথে তুলে ধরতে গিয়ে তার মত ভুল পদক্ষেপ না নিই ৷
ইঞ্জিলে বর্ণিত হয়েছে যে, “তারা মনুষ্য পুত্রকে শক্তি ও মহিমার সংগে মেঘে করে আসতে দেখবে ৷” ২৪(৩০) মথি, ইঞ্জিল ৷ অভিলাষ থাকলে সমস্ত কোরআনের আয়াত সমূহ কথার ফাঁকে ফাঁকে বর্ণনা করা যায় কারণ সব আয়াতের অর্থ অতীত বর্তমান ও ভবিষ্যতকে বুঝায় বিধায় তা করা সম্ভব ৷ এই সুযোগে মির্জা আহমদ আয়াতের কিয়দংশ বর্ণনা করে লোক সম্মুখে উপস্থাপন করেছেন ৷ কেন বেশী বেশী আয়াতের উদ্ধৃতির প্রয়োজন ? কারণ বলতে গেলে বলা যায় যে, হযরত ঈসা (আঃ) এর আগমন মহাশক্তি ও মহিমার সংগে সম্পর্কযুক্ত ৷ কোরআন হচ্ছে মহাশক্তি এবং আল্লাহর মহিমা ৷ যেহেতু তাঁর কাছে ওহী নাযিল হবে না সেহেতু কোরআনই একমাত্র গ্রন্থ যা থেকে তিনি উদ্ধৃতি প্রদান করবেন, ইহাই ধারণা করা যায় ৷






কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন