শনিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১২

আমার কথা প্রথম খণ্ড (১১)



আমার কথা   প্রথম খণ্ড (১১)
আবুলকলামআজাদবাসু
24/11/2012

রোগ মুক্তির প্রত্যাশায় ঘুরে ভ্রমর
ঔষধ সেবনে যদি হয় রোগাভাব
বড়ি খেলে মোর গড়ে উঠবে সদ্ভাব
ঈসা দাবীর শঠতা হবে লণ্ডভণ্ড ৷
কৃষ্ণ রক্ত বস্ত্র পরনে কর দর্শন
পূর্বাভাসে ব্যক্ত এ নহে মোর কথন
সিদ্ধার্থ বুদ্ধ জ্ঞান প্রাপ্তে হয় নির্বাণ
তাঁর লাল গোলাপি চাদর হয় দৃষ্ট
জানে কি কেউ কভু এ নামে ঈসা গুপ্ত
কহিলাম নত শিরে নহি, আমি নহি,
সে-ই আগমনকারী, ভুল নাম ডাকা,
বল আমায়, কি নাম রাখিয়াছ তবে?

অনেকে তৃষ্ণা পিপাসা মন নিয়ে এদিক ওদিক ছুটাছুটি করছে, তা নিবারণ করার লক্ষ্যে, তৈরিকৃত এ লাঠ্যৌষধি এবং ডাক্তারের পরামর্শে হয়তো এ বিশ্বে সদ্ভাব, ভ্রাতৃত্ব, মানুষে মানুষে প্রেম প্রীতি ভালবাসা নবরূপে ফিরে আসতে পারে ৷ সে সাথে তাদেরও পরিত্রাণ হবে যারা এতদিন নিজেকে ঈসা মসি বলে দাবী করতো ৷ তাদের এ শঠামি শয়তানের দেয়া প্রতিশ্রুতি ব্যতীত অন্য কিছু নহে ৷ অযথা সময় নষ্ট না করে দেখ- এমন এক কৃষ্ণের আবির্ভাব হয়েছে, যিনি কৃষ্ণ নন, তিনিই বুদ্ধ, তিনিই ঈসা মসি ৷ বাল্যকাল থেকে পরনে গৈরিক বসন, লাল গোলাপি চাদর, রক্তমাখা বস্ত্র এবং ব্যাধ এর রক্ত মাখা বস্ত্র পরিধান করে তিনি বাস্তব আকাশে প্রথম বুদ্ধত্ব লাভ করেন ৷ কাকুতি মিনতি যতই করা হল, যে একজন পাপী কি করে সে-ই আগমনকারী হতে পারে যিনি কিয়ামতের পূবে আগমন করবেন? একান্তই যদি তা হয় তাহলে তার নাম প্রকাশের অনুরোধ মিনতি, যাঞ্চা করেও তেমন কিছুই পাওয়া গেল না ৷
সত্য ও মহাসত্য প্রকাশ হয়ে গেছে পূর্বেই ৷ তবুও অনুসন্ধিৎসু মহলে সত্যের অনুসন্ধিৎসু মহলে সত্যের অনুসন্ধান করা এবং উহা বিজ্ঞান সম্মত কিনা যাচাই করার লোক পৃথিবীতে প্রচুর বিদ্যমান ৷ মনে হয় যেন তারা এখনও মহা-গ্রন্থ পর্যাপ্ত-ভাবে গবেষণা করে নি ৷ ফলে তারা চায় নতুন এক মতবাদ যা আদৌ সম্ভব নয় ৷ তাঁদের মধ্যে স্বামী বিবেকানন্দও একজন ৷ আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়, একমাত্র তাঁর উপাসনা করা হোক, তা মধ্যবর্তী দেওয়াল ব্যতীত ৷ স্বামী বিবেকানন্দ এর কথা বলে তাঁকে খাটো করা উদ্দেশ্য নয়, এ কথা স্বীকার করতে হবে যে প্রত্যেক ধর্মেই সত্য লুক্কায়িত রয়েছে ৷ তাই অন্য ধর্মাবলম্বীদের সম্মানের চোখে দেখা এবং প্রত্যেক কর্মের ভাল দিক বিবেচনা করে জ্ঞান আহরণ করা প্রয়োজন ৷
“যাহারা কুফরি করিয়াছে তুমি তাহাদিগকে সতর্ক কর বা না কর, তাহাদের পক্ষে উভয়ই সমান; তাহারা ঈমান আনিবে না ৷ আল্লাহ তাহাদের হৃদয় ও কর্ণ মোহর করিয়া দিয়াছেন; তাহাদের চক্ষুর উপর আবরণ করিয়াছে এবং তাহাদের জন্য রহিয়াছে মহা-শাস্তি ৷” ২(৬-৭) সুরা বাকারা, কোরআন ৷
আল্লাহ অত্যন্ত দয়ালু ৷ তিনি দয়াময় ৷ যদিও তিনি তাঁর সৃষ্ট জীবদের শাস্তির কথা বলেছেন তবু তিনি যে দয়ার সাগর ৷ মানুষের প্রকৃত সদর দপ্তর হল  তার বুদ্ধিমত্তা বা যাকে প্রধান কার্যালয় বলা হয় ৷ পূর্বে বলা হয়েছে যে, একটা সূরা ব্যতীত সবগুলোতে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রহিম’ দিয়ে শুরু করা হয়েছে ৷ মানুষ যদি দোষত্রুটি করে থাকে এ সুরা তওবা বা অনুশোচনার মাধ্যমে তার পাপ লাঘব করতে পারে ৷ আল্লাহই উত্তম হেদায়তকারী ৷ কোরআনের আয়াত উল্লেখ করে পূর্বাপর আয়াত সমূহ সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান ব্যতীত উহার যাথার্থ্য প্রকাশ করা সমীচীন নয় ৷ কিন্তু বিশেষ এক গোত্র এ ব্যাপারে গাফিল ৷ তারা নিজেরাই নিজেদের জ্ঞানী রূপে আখ্যায়িত করেছেন ৷
“মহাসত্য কলমের জ্ঞান দ্বারা শিক্ষা দেয়া হয়েছে ৷ কলম জ্ঞানের উৎস, জ্ঞান হল আল্লাহর বা তাঁর নুর, নুর হল সেই জ্ঞান বৃক্ষের সুশীতল ছায়া আর বৃক্ষ সামান্য সরিষার বীজ, বীজের উৎস স্থান বা মাটি, কাল, পানি, রোদ, বাতাস ৷ আবার এদের উৎসও নুর বা জ্ঞান, আর এই জ্ঞানের উৎস সর্বজ্ঞানী ৷”
পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করে লাভ নেই ৷ সব কিছুর মূল সর্বজ্ঞানী আল্লাহ ৷ ‘সহজ ও সরল পথ’ নির্দেশক এর মাধ্যম ‘কলম’ বা মসি ৷ মসি পরিচালনার জন্য প্রয়োজন দক্ষ পরিচালক ৷ ভাষাতত্ত্ব জ্ঞান, ধর্মশাস্ত্রে অভিজ্ঞ, বাগ্মিতা এবং অলৌকিক ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তিই কেবল এ ক্ষেত্রে সদ্ব্যবহার করতে পারে ৷ আল্লাহ কিনা একজন অনভিজ্ঞ লোককে মসি পরিচালনার নিমিত্তে মনোনয়ন করবেন তা কখনো চিন্তা ভাবনাও করা যায় না !
“ভূ-পৃষ্ঠে যাহা কিছু আছে সমস্তই নশ্বর-অবিনশ্বর কেবল তোমার প্রতিপালকের সত্তা, যিনি মহিমময়, মহানুভব ৷ সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদিগের কোন অনুগ্রহ অস্বীকার করিবে ৷” ৫৫(২৬-২৮) কোরআন ৷
ধর্মশাস্ত্র সম্বন্ধে মসি ধরতে হলে প্রত্যেক শাস্ত্রের মূলতত্ত্ব জ্ঞান, বিকাশ শক্তি এবং সুন্দরভাবে পাঠক সমাজে উপস্থাপন করার ক্ষমতা সম্পন্ন হতে হয় ৷ উহার সমস্তই যেন কথিত মসির অভাব রয়েছে ৷ কী হাল অবস্থায় দীর্ঘ জীবন অতিবাহিত হয়ে গেছে তা টেরও পাওয়া যায় নি ৷ কখনও মনে এরূপ আবেগপূর্ণ বারিধারা বর্ষিত হয় নি যে, যা দিয়ে সেরূপ ঘটনাকে জনসমক্ষে উপস্থাপন করা যায় ৷ ধর্ম পালনে গাফলতি এবং ধর্মশাস্ত্র সম্পর্কে জ্ঞাত হবার অনীহা বরাবর ছিল ৷ ফলে দৃষ্টির অগোচরে দীর্ঘকাল কেটে গেল ৷ উপরে বর্ণিত আয়াত গুলোর সঠিক ব্যাখ্যা প্রদান করাও বর্ণিত মসির পক্ষে সম্ভব নয় ৷ তবে সহজ অর্থে যা বুঝা যায় তা এই যে কোন জীব বা প্রাণী, হোক সে মানব জাতি, তার কোন সত্তা নেই ৷ অস্তিত্ব কেবল আল্লাহর ৷ বুঝে হোক না বুঝে হোক মানুষকে এমন আসনে উপস্থিত করা হচ্ছে যেন মানুষও একদা আল্লাহর সমকক্ষ ছিল ৷ ভগবৎ গীতায় বলা হয়েছে যে, আত্মা জন্মেও না, মরেও না ৷ কোরআনে ও হাদিছে নফসের বিভিন্ন হালতের কথা বলা হয়েছে, প্রকৃত অর্থে সেটাই আত্মা ৷ কিন্তু কোরআন মতে এ আত্মাকেও বা নফসকেও একবার মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে ৷ আর যা মরে তা কখনও অবিনশ্বর, অক্ষয়, অমর বা শাশ্বত নয় ৷



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন