সোমবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

আমার কথা প্রথম খণ্ড (১৯)



আমার কথা   প্রথম খণ্ড (১৯)
আবুলকালামআজাদবাসু
12/2/2013

নিজ ধর্মে ভণ্ডামি হীন স্বার্থের তরে,
ধন্য ধন্য হে শিবো, নিনু ধন পিপাসী
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়েছ নিজ ভাবমূর্তি
হতভাগা! জুটেছে প্রদত্ত অপকীর্তি,
বনিয়া ধনকুবের কি বা সাধ্য রুখে
রক্তে রঞ্জিত কৃষ্ণ-ধনু ধনুক তীর ৷
অবশ্যই ইসলাম আল্লাহর মনোনীত ধর্ম, কিন্তু এ ধর্মের অন্তরালে নিজেকে লুকিয়ে রেখে যদি বনিয়াদের সহায়তায় কেহ যদি উচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত হতে চায় তাদের জন্য তা কখনো সম্ভব হবে না ৷ যারা এরূপ আসক্তিতে আগ্রহী হয়ে ধর্ম প্রচারে অগ্রসর হবে তারাও পশ্চাৎপদ হয়ে ফিরে আসবে ৷ হাদিসের বর্ণনা অনুসারে তাদের কপালে অঙ্কিত করা হবে বিশ্ব-প্রকৃতি কর্তৃক কা-ফে-র যা কখনও কেহ মুছতে পারবে না  কারণ তার নিদর্শন কিয়ামত অবধি আল্লাহ সংরক্ষিত রাখবেন ৷ তারাই মসি দজ্জাল বাহিনীর সদস্য ৷ পশ্চাতে পশ্চাতে কৃষ্ণ ধনুক তীর বিদ্ধ করা হবে যাতে গায়ে বিষাক্ত তীরের আঘাতে তা ক্ষত বিক্ষত হয় ৷ কারণ তাদের স্বভাব হবে একগুঁয়েমি, অবাধ্য ও দুর্দমনীয়, কেহই তাদেরকে সৎ-উপদেশ দ্বারা বশীভূত করতে পারবে না ৷ তারা যে জাতে বিধর্মী হবে এমন বর্ণনা কোথাও নেই ৷ বরং এ কথাই বিশ্বপতি বলেছেন যে, তারা কাফের হবে ৷ (বিশেষভাবে গবেষণায় দেখা যায় যারা কাফের তারা কি নতুনভাবে কাফের হবে?) ৷
আর তা সত্য ধর্মের লোক না হলে প্রশ্ন জাগে কি ভাবে তারা কাফের হবে! কারণ কাফের তো কাফের আছেন, তাদেরকে নূতন করে কাফের বলার প্রয়োজন তো নেই ৷
“তুমি কখনও মনে করিও না যে, আল্লাহ তাঁহার রসুলগণের প্রতি প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন ৷ আল্লাহ পরাক্রমশালী, দণ্ড বিধায়ক ৷” ১৪(৪৭) কোরআন ৷
মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী একজন নবী দাবীকারক ব্যক্তি, সেও এরূপ বহু কোরআনের আয়াত উদ্ধৃতি দিতে সংশয় বোধ করেনি, কিছুদিন পর হয়তো আর একজন জালেম আসবেন সেও এরূপ উদাহরণ পেশ করতে দ্বিধা বোধ করবে না ৷ তাহলে সত্য নিরূপণ কে করবে? মনে হয় ইহার ভার আপা-ততঃ কাদিয়ান, বাহাই এবং ইহুদি সম্প্রদায়ের উপর ন্যস্ত থাক্ যাতে তারা কোনটি সত্য তা বেছে নিতে পারে ৷ তবে মনে থাকে যেন আল্লাহ যাকে শক্তি প্রদান করে থাকেন, তাকে কেহই রুখতে পারে না ৷ এমনই এক ব্যক্তি ধরায় এসে বিশ্ববাসীকে যদি জানিয়ে দেয় যে, কেবল একটি ধর্ম কেন, সব ধর্ম শাস্ত্র মতে দলিল ও যুক্তি এবং দর্শন, সর্বোপরি বিশ্ব-প্রকৃতির বিশেষ সাক্ষ্য, আনয়ন করা হবে ৷
“বনী ইসরাইলের মধ্যে যাহারা কুফরি করিয়াছিল তাহারা দাউদ ও মরয়াম তনয় কর্তৃক অভিশপ্ত হইয়াছিল ইহা এই হেতু যে, তাহারা ছিল অবাধ্য ও সীমালংঘনকারী ৷” ৫(৭৮) কোরআন ৷
এই অভিশপ্ত জাতি ইহুদি সম্পর্কে দীর্ঘ রচনা নিষ্প্রয়োজন ৷তাদের সীমা লঙ্ঘন এতই গুরুতর ছিল যে, প্রকাশ্যে তারা নবী রসুলদের হত্যা করতেন ৷ নবীদের হত্যাকারী এ অভিশপ্ত জাতি দীর্ঘকাল যাযাবরের ন্যায় পৃথিবী-ময় ছড়িয়ে ছিল ৷ অবশেষে তারা বনিয়াদের সাথে আঁতাত করে এক কৌশল অবলম্বন করলো ৷ কোরআন ও ইঞ্জিলের বাণীতে আল্লাহ তাদেরকে অবিশ্বাসী এবং অভিশপ্ত জাতি-রূপে আখ্যায়িত করলেন ৷
“এবং তাহারা চক্রান্ত করিয়াছিল আল্লাহও কৌশল করিয়াছিলেন; আল্লাহ কৌশলীদের শ্রেষ্ঠ ৷ ৩(৫৪) কোরআন ৷
খৃষ্টান, ইহুদি ও মুসলিম জানে যে, ইহুদি সম্প্রদায় একটি চক্রান্ত করেছিল যে তাঁকে (ঈসাকে আঃ) শূলে চড়ানো হবে ৷ কিন্তু আল্লাহর কৌশল এমন যে প্রকৃতির, মানুষের বোধাতীত, যা ধারণা করা যায় না, আর এরূপ অভিমত পোষণকারী যারা অনুমান-লব্ধ জ্ঞানকে সঠিক বলে তারা তারা নিশ্চয়ই অবিশ্বাসী ৷ কারণ যাদুই কেবল মানুষ আয়ত্ত করতে পারে কিন্তু অলৌকিক কিছু নয় ৷ যেমন চন্দ্র কিভাবে দ্বিখণ্ডিত হয়েছিল তা আয়ত্তে আনা মানুষের জন্য সম্ভব নয় ৷ 
“স্মরণ কর, যখন আল্লাহ বলিলেন, হে ঈসা! আমি তোমার কাল পূর্ণ করিতেছি এবং আমার নিকট তোমাকে তুলিয়া লইতেছি এবং যাহারা সত্য প্রত্যাখ্যান করিয়াছে তাহাদের মধ্য হইতে তোমাকে মুক্ত করিতেছি ৷ আর তোমার অনুসারীগণকে কিয়ামত পর্যন্ত কাফিরদের উপর প্রাধান্য দিতেছি ৷ অতঃপর আমার কাছে তোমাদের প্রত্যাবর্তন ৷ যে বিষয়ে তোমাদের মতান্তর ঘটিতেছে আমি উহা মীমাংসা করিয়া দিব ৷ ৩(৫৫) কোরআন ৷
পাঠক, পাঠিকার কাছে এ আয়াতের গুরুত্ব তুলে ধরার পূর্বে সবিনয় আরজ এই যে, তাঁরা যেন এ আয়াতের মর্মার্থ ভালভাবে উপলব্ধি করার চেষ্টা করেন ৷ ঈসাকে (আঃ) উত্তোলনের সংবাদ যেমন ইহাতে রয়েছে তেমনি একই আয়াতে পুনঃ-আগমনের সংবাদও রয়েছে ৷ আরও রয়েছে ঘটমান অনুমান-লব্ধ বর্ণনার কাহিনীর জটিল সমস্যার সমাধান ৷
(১)হযরত ঈসাকে (আঃ) এককাল পূর্ণ হবার সাথে সাথে তাঁর দিকে উত্তোলন ৷
(২) তাঁর শত্রু অর্থাৎ ইহুদিদের মধ্য থেকে ৷
(৩) তোমাকে মুক্ত করছি অর্থাৎ সর্বপ্রকার দুঃখ ক্লেশ থেকে ৷
(৪) তোমার অনুসারীদের কিয়ামত অবধি কাফিরদের উপর প্রাধান্য দিতেছি ৷ এবং
(৫) যে বিষয়ে মতভেদ বিরাজমান তা (ঈসা আঃ এর শূলে চড়ানোর ব্যাপার) কিয়ামত দিবসে মীমাংসা করা হবে ৷
(১) এ উত্থাপনকে কেউ কেউ মৃত্যুরূপে আখ্যায়িত করে অপ-ব্যাখ্যার মাধ্যমে নিজেকে ঈসা বলে দাবী করেছেন ৷ তাদের ব্যাখ্যা যদি সত্যও হয়ে থাকে কোরআন প্রকৃতির বিরুদ্ধে কোটি কোটি বৎসর অগ্র এ আইন পাশ করে রেখেছেন যে, তিনি (ঈসা) আবার আসবেন ৷ ইহাতে কারও সাথে সমকক্ষতা বা তুল্যতার বিষয় নেই ৷
(২) তিনি (আঃ) আরও ইহুদি যারা অবিশ্বাসী ছিল তাদের সম্মুখ থেকে উন্নমিত হয়েছেন ৷ অন্য এক আয়াত বর্ণনা করে যদি বলা হয় যে এখানে তো কোন শত্রু দেখতে পাচ্ছি না যাকে রূপান্তর করা হয়েছে, তাহলে তারা ভাল করে দেখুক যে আল্লাহ কাদের মধ্য থেকে তাঁকে মুক্ত করেছেন ৷
(৩) তোমাকে মুক্ত করছি: ইহার অর্থ কি এরূপ যে তাঁকে শূলে চড়ানো? হয়তো এ কর্ম পূর্বেই সংঘটিত হয়ে গেছে যা মানুষের বোধাতীত ৷
(৪) তোমার অনুসারীদের কিয়ামত অবধি কাফিরদের উপর প্রাধান্য দিতেছি: হযরত ঈসা আঃ এর অনুসারী বলতে প্রকৃতপক্ষে মুসলিমগণ, যদি খৃষ্টানদেরকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয় তাহলেও অনুসারীরা কিয়ামত অবধি অবিশ্বাসীদের উপর প্রাধান্য পায় নি, ফলে আর এককাল পূর্ণ হয়ে গেল; এবং ঘটমান যা তা নবরূপে হযরত ঈসা আঃ এর শুভাগমন বার্তা দিচ্ছে ৷ যেথায় উত্তোলন  সেথায় অবতরণ সংবাদ নিহিত ছিল ৷ ইহার কারণ এই যে, ইসরাইল রাষ্ট্র জন্মের ফলে এ আয়াতের কাল পূর্ণ হয়েছে এবং মুসলিম বা খৃষ্টান কাকেও জয়ী রাখা হয় নি ৷ এবং
(৫) যারা হযরত ঈসাকে আঃ শূলে চড়াচ্ছেন এবং মৃতবৎ করে এইরূপ বর্ণনা করছেন: খোদার কৌশল, তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়, হয়তো তারা কোরআন সম্পর্কে সন্দিহান, এই ঘটনা সর্বকালের জন্য সংশয়যুক্ত থাকবে এবং কিয়ামত দিবসে কেবল আল্লাহ নিজেই তা মীমাংসা করে দিবেন ৷ পৃথিবীতে এরূপ ঘটনা বহু সংঘটিত হয়েছে যে মৃতপ্রায় ব্যক্তি জীবিত হয়েছেন, ইহাতে কোন রকম সর্ব-কৌশলীর কৌশল বা সর্বশক্তিমানের কুদরত প্রকাশের বিষয়বস্তু আছে বলে মনে হয় না ৷

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন