সোমবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

আমার কথা প্রথম খণ্ড (১৮)


আমার কথা   প্রথম খণ্ড (১৮)
আবুলকালামআজাদবাসু
5/2/2013
কভু নহে ভূ-তে মানবের নিদর্শন,
মানব সেবা বিশেষত: স্মরণযোগ্য,
শান্তশিষ্ট আজ্ঞাবহ নহে অপ্রতুল,
মুখ্য কর্ম বিনা শুধু স্মরণ অধম ৷
পূর্ণ জ্ঞান যখন আসে জন জনার,
দেখে জন সমুদ্রের অতল তলায়,
দু-পা আপন জনের রজ্জুতে আবদ্ধ ৷
নামে মানুষ বড় হয় না ৷বড় হতে হলে কর্মে তা প্রমাণ করতে হবে ৷ ‘আহমদ’ নাম নিয়ে এসে কেহ যদি বলে আমি ইমাম মেহদী তাহলে শত শত আহমদ এ প্রশংসিত ব্যক্তি হতে পারতেন, সে নাম অন্য কারও জন্য প্রযোজ্য হতে পারে না ৷ তবুও জালেমরা সে ব্যবহার করে অপ-ব্যাখ্যার মাধ্যমে মুসলিমদের ধোঁকা দেবার অপ-প্রয়াস চালায়ে যাচ্ছেন ৷ মানুষের পরিচয় কেবল মানুষের কর্ম হিসেবে ৷ মানুষ সৃষ্টির কোন কারণই ছিল না, যেথায় লক্ষ-কোটি ফেরেশতা আল্লাহর জয়ধ্বনি স্তুতিগান করছেন ৷ আল্লাহ মানব সেবাকে প্রাধান্য দিয়েছেন অত্যধিক ৷ পূর্ণজ্ঞান প্রাপ্ত হলে মানুষ আল্লাহর দিকে আকৃষ্ট হয়ে পড়ে কিন্তু তথায় দেখে যে সমুদ্রের অতল তলায় সে-জন বাস করছে, তার পা দু-খানা আপনজনের রশি দ্বারা আবদ্ধ যা থেকে মুক্ত হওয়া প্রায় অসম্ভব৷ তাকওয়াই মুসলিমদের প্রধান বৈশিষ্ট্য, তাই তারা এ প্রশ্ন উত্থাপন করে না যে কেন মানুষ সৃষ্টি করা হলও?
“স্মরণ কর, তোমরা তোমাদিগের প্রতিপালকের নিকট সাহায্য প্রার্থনা করিয়াছিলে, তিনি উহা কবুল করিয়াছিলেন এবং বলিয়াছিলেন আমি তোমাদিগকে সাহায্য করিব এক সহস্র ফেরেশতা দ্বারা যাহারা একের পর এক আসিবে ৷’ ৮(৯) কোরআন ৷
“হে আল্লাহ! বিপদের সময় যখন অতিশয় আসন্ন হয়েছিল তুমি তোমার পেয়ারা রসুলকে সহস্র ফেরেশতা দ্বারা সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলে, তেমন প্রতিশ্রুতি প্রদান না করলে এ বিশ্ব-ভুবনে তুমি ছাড়া আর কে বা আছে যে প্রতি পদে পদে সাহায্য করতে পারে? যিনি ৮৪ খানা পুস্তক রচনা করেছেন তার সম্মুখে নিজকে অতিশয় ক্ষুদ্র মনে হয় ৷ তুমিই একমাত্র সাহায্যকারী ৷”
“তিনি(কাদিয়ানী)লিখেছেন: ‘আলমগির ধর্ম তথা বিশ্ব বিজয়ী ধর্মের মাপকাঠি হিসেবে কি কি বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে সে বিষয়ে আলোকপাত করতে যেয়ে মির্জা গোলাম আহমদ তার রচিত কেতাবাদির মধ্যে জগতবাসীর সামনে এমন এক ধরণের মাপকাঠি পেশ করেছেন যে গুলোর সম্মুখে একমাত্র ইসলাম ব্যতিরেকে  আর কোন ধর্ম দাড়াতে সক্ষম নহে ৷ কামেল, জিন্দা, শ্রেষ্ঠ এবং সার্বজনীন (আন্তর্জাতিক) ধর্ম হিসেবে তিনি গৃহীত হওয়ায় যোগ্যতা হিসেবে তিনি নিম্নলিখিত ৬টি বিভিন্ন মাপকাঠির দিকে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন: (১) প্রথম মাপকাঠি হলও দাবীকারকের তাঁর ধর্মের নিজস্ব গ্রন্থ হতেই দলিল প্রমাণাদি উপস্থাপিত করতে হবে ৷ তা না হলে উহার শ্রেষ্ঠত্ব আদৌ গ্রহণযোগ্য হতে পারে না বরং সেটা হবে ঐ প্রবাদ বাক্য সদৃশ যেমন: ‘বাদী নীরব সাক্ষী মুখর’ ৷” (আহমদিয়াত ১৪২ পৃষ্ঠা)
”তাহাদের অন্তরে ব্যাধি রহিয়াছে ৷ অতঃপর আল্লাহ তাহাদের ব্যাধি বৃদ্ধি করিয়াছেন এবং তাহাদের জন্য রহিয়াছে কষ্টদায়ক শাস্তি কারণ তাহারা মিথ্যাচারী ৷” ২(১০) কোরআন ৷
যারা মিথ্যাচারী, অপ-ব্যাখ্যাকারী, এক অর্থের স্থলে অন্য অর্থ নিজ স্বার্থে আনয়ন করে, সমালোচনা করলে বলে যে, তারা জ্ঞানী এবং তারা যা বুঝেন অন্যরা তা বুঝে না এবং তারাই কোরআনের সর্বশ্রেষ্ঠ বোধসম্পন্ন ব্যক্তি ৷ আল্লাহ বলেন যে, তাদের জন্য রয়েছে কষ্টদায়ক শাস্তি ৷
হে বিশ্ববাসী! আহমদ সাহেব আহ্বান করেছেন স্ব-ধর্ম হতে এমন দলিল পেশ করতে হবে যে, যা প্রমাণ করে তার (মির্জার) দাবী মিথ্যা ৷ প্রথমত: মুসলমান হয়ে অন্য মুসলিমে বিরুদ্ধে “মসি”ধরতে হচ্ছে ৷ তিনি পাক-কোরআনকে সর্বশ্রেষ্ঠ সাক্ষ্য রূপে দাড় করিয়েছেন ৷ আর তার নিজের বেলায় তো কথাই নেই ৷ কিন্তু একথা প্রণিধানযোগ্য যে হযরত ঈসা (আঃ) এর আগমন কেবল ইসলামের জন্য নয় ৷ তবু তার এ চ্যালেঞ্জ সাদরে গ্রহণ করা হয়েছে ৷ তাছাড়া খৃষ্টান হলে ইঞ্জিল থেকে. ইহুদী হলে বাইবেল থেকে, হিন্দু হলে মূলগ্রন্থ বেদ থেকে, বৌদ্ধ হলে ত্রিপিটক থেকে এবং পারসিক হলে জরথুস্ত ধর্মশাস্ত্র থেকে দলিল উত্থাপন করা অপরিহার্য নচেৎ তা গ্রহণ যোগ্য হবে না ৷ (সব ধর্ম গ্রন্থ থেকে যিনি প্রমাণ পেশ করতে পারবে তার ব্যাপারে কি হবে, হয়তো ঐ অনুসারীরা আহমদ সাহেবের পদাঙ্ক অনুসরণ করবে না )৷ এরূপ প্রমাণাদি যদি সব ধর্ম গ্রন্থ থেকে আনয়ন করা হয় তাহলে তার এ মুখ যাবে কোথায়? ইহার অর্থই দাঁড়াবে তার দাবী ভিত্তিহীন ৷ বিভিন্ন-ধর্মশাস্ত্র থেকে সংগৃহীত দৃষ্টান্ত আশা করি চিন্তাশীল ও জ্ঞানী ব্যক্তিবর্গের কাছে হিংসা বিদ্বেষ ছাড়াই জ্ঞানের খাতিরে বোধ ও হৃদয়ঙ্গম করার আহ্বান জানাই ৷ গঠনমূলক সমালোচনা শান্তি স্থাপনের দ্বার উন্মোচিত হবে বলে বিশ্বাস ৷ উহা ছাড়া বিশ্ব-প্রকৃতির ধর্ম সকলের নিমিত্তে প্রধান উপাত্ত বলে সার্বজনীনভাবে বিশ্ববাসীর কাছে নির্দ্বিধায় তা গ্রহণীয় ৷ কেবল ইসলামের উপর প্রাধান্য বিস্তার না করে যে যুগোপযোগী উদাহরণ জনসম্মুখে অবতারণা করা হচ্ছে তা নিশ্চয়ই সত্য বিধানকারীর পরম সত্য ৷ কারণ এ পৃথিবীতে ছয়শ কোটির অধিক মানুষের মধ্যে যথাক্রমে খৃষ্টান, বৌদ্ধ, মুসলিম, হিন্দু, ইহুদি ও অন্যান্য জাতি রয়েছে যারা একই মাতাপিতার সন্তান এবং আল্লাহর বান্দা ৷


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন