রবিবার, ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

এইরূপই প্রকৃতি কিন্তু মানুষের জন্য নয়


এইরূপই প্রকৃতি কিন্তু মানুষের জন্য নয়
আবুলকালামআজাদবাসু
3/2/2013
আল্লাহর আদেশক্রমে প্রকৃতিই সমস্ত পৃথিবী বা জগতসমূহ পরিচালনা করছে ৷ প্রকৃতি নিজ থেকে স্বাধীন নয় ৷ সে যা ইচ্ছা তা করতে পারে না  নিজের ইচ্ছামত ৷ কিছু সংখ্যক লোক প্রকৃতিকে বিশ্বাস করে আল্লাহর ঊর্ধ্বে একটি শক্তিশালী চরম শক্তি হিসাবে ৷  এ বিশ্বাসে তারা প্রকৃতির চন্দ্র ও সূর্যকে পূজা করে ৷ পৃথিবীর মত ঐ সব মাটির বা পাথরের কি ক্ষমতা যে কোনরূপ খাদ্য ছাড়া বা উপকরণ ছাড়া ঐ সব পদার্থ বিশেষ টিকে থাকতে পারে? মানুষের একি হাল! মানুষ হয়তো ভাবতে পারে যে পৃথিবী কোনরূপ খাদ্য বা উপকরণ ছাড়াই বেঁচে রয়েছে ৷ তার যদি জীবনই না থাকে তাহলে তা বাঁচে কেমনে? এই উপকরণ ভিন্নতর হলেও মাটিও ভালভাবে প্রাণীর ন্যায় সবকিছু হজম করে নিচ্ছে ৷ যে কোন উপায়ে খাদ্য হজম করে তার প্রাণ নাই এ কেমন কথা! আমাদের চিন্তা করা দরকার যে কোন প্রাণী বা সৃষ্টির এমন কিছু নেই যার প্রাণ নাই হতে পারে তা ভিন্নতর ৷ প্রত্যেকের খাদ্যের উপাদান ভিন্ন ভিন্ন প্রকৃতির হতে পারে ৷ এমন প্রাণীও রয়েছে যারা কেবল বাতাস গ্রহণ করে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকে ৷ পৃথিবী উপাদান গ্রহণ ব্যতীত টিকে থাকতে পারবে না ৷ ক্ষেত্র বিশেষে মানুষও প্রকৃতির নিয়মের আওতায় আসে ৷ বিশেষভাবে তা প্রযোজ্য মেয়েদের বেলায় ৷ যাই কিছু বাঁচে তাইই কোন না কোন উপাদান গ্রহণ করে যা জানা নাই ৷
প্রকৃতি এরূপ যে সূর্য পূর্ব দিকে উদিত হয় কারণ পৃথিবী পশ্চিম দিক থেকে পূর্ব দিকে ঘুরে ৷ উহা কি কখনও শূন্যের একই স্থান থেকে সংঘটিত হচ্ছে যে সূর্য পূর্ব দিক থেকে উদিত হয়ে পশ্চিম দিকে অস্ত যাচ্ছে! (হয়তো সেই সময় স্থান কখনও আর ফিরে আসবে না ৷ যদিও আসে তাহলে তা হবে আল্লাহর একদিনের হিসাব ৷ কারণ সূর্যও স্থির নয় এবং সেই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের যাবতীয় গ্রহ-নক্ষত্র সমূহ অবিরত একে অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে অবিরাম নিজ নিজ কক্ষপথে ঘুরছে) ৷ হয়তো উত্তর দেয়া হবে হ্যাঁ সূচক কিন্তু প্রকৃতপক্ষে উত্তর হচ্ছে না ৷ এই সত্য বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত না হলে হযরত সঃ এর পাঠ কৃত আল্লাহর বাণী অন্ধকারে থাকতো ৷ বলা বাহুল্য সত্যি এই কোরআনের বাণী আল্লাহ প্রদত্ত কারণ সৃষ্টিকর্তাই কেবল তা জানেন ৷ কারণ হিসাবে একথাও বলা যায় যে দুবার বা প্রতিদিন একই স্থান থেকে উদিত হয় না এবং একই স্থান ঐরূপ মনে হচ্ছে ৷ তাই কোরআনে বলা হয়েছে সূর্য দু-স্থান থেকে উদিত হয় এবং দু-স্থানে অস্ত যায় ৷ (প্রকৃত ঘটনা এই যে উহা কখনও একই স্থানে অবস্থান করছে না) ৷ পৃথিবী যদিও চব্বিশ ঘন্টায় ঘুরে দিন ও রাত শেষে ঐ সূর্যের চতুর্দিকে ঘুরে আবারও পূর্ব দিকে উদিত হচ্ছে ততক্ষণে স্থান পরিবর্তন হয়ে অন্যত্র শূন্যর অন্য স্থানে পৌঁছে গেছে ৷ সুতরাং সময় ও নির্ধারিত স্থান কখনও ফিরে আসে না ৷ অনুমান লব্ধ জ্ঞান দ্বারা সোজা লাইন এঁকে এটাই প্রমাণ করা যাবে যে ৩৬৫ দিন এবং আর কয়েক ঘন্টায় পৃথিবী সূর্যের চতুর্দিকে একবার ঘুরে আবার স্ব স্থানে ফিরছে ৷ আসলে ঐ স্থানটিও মহাশূন্যে ভিন্ন ৷ আর মাত্র সেই দিন ১৯২৮ সালে বিজ্ঞানীরা তা প্রমাণ করলেন যে সূর্য স্থির নয় অথচ চৌদ্দ-শত বছর পূর্বে একথা কোরআনে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে ৷ সু-নিশ্চিতভাবে বলা যায় এ কথা কে বলেছেন: উত্তর যিনি সৃষ্টি করেছেন তিনিই ৷ প্রকৃতি কি সবল দুবর্লকে গ্রাস করেই টিকে রয়েছে ৷
কখনও কখনও দেখা যায় যে শিকারি প্রাণী শিকার আয়ত্তে রেখে হত্যা করার আগে খেলতে থাকে ঐ শিকারকে নিয়ে ৷ ইহা এইরূপ যে দুর্বলের সাথে খেলা করা ৷ বাঘ এবং বিড়াল এই স্বভাবের ৷ একদিন তৃষ্ণার্ত হরিণ শাবক জলাধারে পানি পান করতে গেল ৷ একই সময় একটি বাঘও পানি পান করতে গেল কিন্তু বাঘটি জলধারার উপরিভাগে ছিল ৷ সে দেখল নীচের দিকে হরিণটি জল পান করছে ৷ বাঘটি ধীরে ধীরে হরিণটির নিকটে গেল এবং বলল ‘কেন তুমি ঝর্ণার পানি ঘোলাটে করছ, দেখতে পাও না আমি জল পান করছি?’ উত্তরে হরিণটি বলল, ‘হুজুর আমি তো নীচের দিকেই জল পান করছিলাম তাতে আপনার প্রবাহিত হয়ে আসা পানি ঘোলাটে হওয়ার কথা নয় ৷ বাঘটি বলল, তুমি যদি তা করে থাক তাহলে তোমার পূর্ব পুরুষদের মধ্যে কেউ তা করেছে, তাই তোমাকেই সেই শাস্তি ভোগ করতে হবে, এই বলে অমনি সে হরিণটির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল এবং নির্মমভাবে তাকে হত্যা করল ৷ এ পৃথিবীতে অনুরূপ ঘটনা দেখতে পান যা মানুষে মানুষের বিরুদ্ধে করে থাকে?
প্রথমটি ছিল নেহায়-ৎ প্রকৃতিগত ৷ যা মানুষ কর্তৃক মানুষের বিরুদ্ধে ঘটে তা প্রকৃতিগত নয় ৷ একজন লোক ছিল যে ইচ্ছাকৃত অসৎ কর্ম করত ৷ যা সে পছন্দ করত না বা তার বিরুদ্ধে গেলে তার বিরুদ্ধে সে ঐরূপ অপকর্ম করত ৷ সে তার বাড়ীর নীচে একটি বাড়ী তৈরি করেছিল ৷ সেখানে সে বাঘ বা হিংস্র প্রাণী পালন করত ৷ অপছন্দের মানুষ ধরে এনে গোপনে তাদের ঐ বাঘের মুখে তুলে দিত ৷ ঐ কাজ করার পূর্বে সে আনন্দ করার জন্য মদ্য পান সহ উলঙ্গ নাচের ব্যবস্থা নিত ৷ সে এমনই নির্মম ছিল যে জীবন্ত মানুষের অঙ্গ কেটে ঐ বাঘকে খাওয়াত ৷  একই সাথে সে আনন্দ উৎসবও করত ৷ ঘটনার শেষে সে না কি দুধ দিয়ে গোসল করত ৷ (এমন লোক হয়তো পাওয়া যাব যে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত নয় কিন্তু তার নির্দেশেই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে পরের দিন বিদেশ পাড়ি দিয়েছেন ৷ এরূপ কর্মের দোষী ব্যক্তিদের বের করে আনা খুবই মুস্কিল ৷ আবার অসৎ ব্যক্তিরাই সমাজের নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন )৷ ঐ একদিন ধরা পড়ে এবং তার মৃত্যুদণ্ড হয় ৷ প্রকৃতির অন্যান্য জীবের মত মানুষের কর্ম তানয় যদিও মানুষ বিভিন্ন উপাদান বা খাদ্য গ্রহণ করে জীবন ধারণ করে থাকে ৷ মানুষ প্রকৃতির ঐ নিয়মের উপর নির্ভরশীল নয় ৷ প্রয়োজনে মানুষ পশু পাখি হত্যা করে থাকে তাই বলে অপছন্দ হলে কোনমতে মানুষ হত্যা নয় ৷ বিচারবিহীন মানুষ হত্যা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ৷ কিন্তু দেখা যায় যদি কেহ তার নীতি অনুসরণ না করে তাহলে তাকেই তারা হত্যা করছে ৷ এতে কোন ধর্মই অনুসরণ করছে না ৷ অথচ ইসলামে নির্দেশ রয়েছে যে কেউ পরাজয় স্বীকার করবে তাকে সসম্মানে ইচ্ছানুযায়ী তার গন্তব্য স্থানে পৌঁছিয়ে দিতে ৷ যদি ঐ লোক একই স্থানে বাস করতে চায় তারও স্বাধীনতা রয়েছে কিন্তু রাষ্ট্রীয় আইন তাকে মানতে হবে ৷ একজন লোকের নিজ ইচ্ছানুযায়ী ধর্ম পালন করার স্বাধীনতা ইসলামে রয়েছে ৷ সেই স্বাধীনতা যদি ভোগ করতে না পারে তাতে ইসলামকে দোষারোপ করা যায় না ৷
মাটি মৃত মানুষকে হজম করে থাকে ৷ ইহা প্রকৃতিগত ৷ মানুষের জন্য প্রকৃতিগত নয় কোনটি? মানুষই প্রকৃতির রাজা ৷ মানুষকে সৃষ্টির সেরা হিসেবে ৷ তাই প্রকৃতি মানুষের আয়ত্তে ৷ ইহার অর্থ এই নয় যে মানুষ সূর্যকে পশ্চিমদিকে উদিত করবে ৷ মানুষের জন্য শোভনীয় নয় এমন পরিস্থিতিকে অন্যদিকে পরিচালনা করা যায় ৷ স্থলে ধরা যাক একটি নদীর দিক পরিবর্তন ৷
মানুষ কিভাবে প্রকৃতির সেরা জীব হলেন? আল্লাহ মানুষকে বিভিন্ন উপাদানে সৃষ্টি করেছেন ৷ যদিও মাটির মানুষকে ভক্ষণ করছে তথাপি মানুষ জীবিত ৷ কেবল মাটির শরীর তথাপি আত্মা এবং রূহকে প্রকৃতি গ্রাস করতে পারে না ৷ হয়তো গবেষণায় মানুষ একদিন এই সত্য আবিষ্কার করবে ৷ প্রকৃতি কি? তাও আল্লাহর সৃষ্টি কিন্তু মানুষের উপকারার্থে ৷ সুতরাং কোনরূপ প্রকৃতির চন্দ্র-সূর্যকে বা গ্রহ নক্ষত্রকে পূজা করা আল্লাহর বিধান নয় ৷ মানুষকে গ্রহ-নক্ষত্র পূজা করার জন্য সৃষ্টি করা হয় নি বরং আল্লাহকে ৷ ইহা কি আপনাদের পছন্দ নয়?




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন