আমার কথা প্রথম খণ্ড (২১)
আবুলকালামআজাদবাসু
26/2/2013
নাহি তাতে গর্ব মোর ইচ্ছা আল্লাহর,
শুনা-ব
অন্য
জাতির ধর্মশাস্ত্র তোরে,
প্রথমে গমন কর নিজ ধর্ম গ্রন্থে ৷
আল্লাহ তাঁরে আকাশে উত্তোলন করে,
তুমি তাঁরে সমাধিস্থ করেছ কাশ্মীরে ৷
স্বার্থ চরিতার্থে কাশ্মীরে নিয়েছ তাঁরে!
যা রচনা করা হচ্ছে তাতে মোটেও কোন গর্ব নেই কারণ
এ সবই আল্লাহর ইচ্ছারই প্রতিফলন ঘটছে ৷ একদল মনে করতে পারে তারা কি আল্লাহর
অভিলাষের বিরুদ্ধে তাদের রচিত কিতাবাদি উপস্থাপন করেছেন? উত্তরে বলব, ‘না’! তারাও
আল্লাহর আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়েছেন ৷ তারা গর্বিত এ কারণে যে, কোরআনের ‘আহমদ’ নামটা
সমভাবে প্রযোজ্য মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীর জন্যও ৷ ভুল ব্যাখ্যার কারণে তারা আজ
অহংকারী ৷ তাই তাড়াহুড়া করে
ঐতিহাসিক প্রমাণের মাধ্যমে হযরত ঈসাকে (আঃ) ১২০ বৎসর বয়সে মৃত্যু দান করে তারা
আত্ম তৃপ্তি লাভ করেছে ৷ শয়তানও এজন্য গর্বিত যে, তার প্রসঙ্গ শতাধিক বার কোরআনে
আলোচিত হয়েছে ৷ তারা আকাশ অর্থ খালি ছাড়া আর কিছু বুঝে না অথচ খালি বলতে কোন জায়গা
এ বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ডে নেই ৷ আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন সাত আসমান ও জমিন ৷ কিন্তু তারা
ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন যে, ঈসা (আঃ) কোথায়, কোন আকাশে বাস করছেন? যদি প্রশ্ন করা হয়
গোলাম আহমদ কাদিয়ানী কোথায় বাস করছেন? নিশ্চয়ই তারা বলবে বরযখে ৷ সুতরাং উপরে নীচে
সর্বস্তরে জীব বসবাস করার উপযোগী স্থানও আল্লাহ সৃষ্টি করে রেখেছেন ৷
“যাহারা কুফরি করিয়াছে আল্লাহ তাহাদিগকে কখনও ক্ষমা করিবেন না এবং তাহাদিগকে কোন পথও
দেখাইবেন না ৷ “ ৪(১৬৮) কোরআন ৷
এরূপ কুফরী কারী অবিশ্বাসী, ভিন্নমত পোষণকারী
যুগে যুগে আবির্ভাব হয়েছে, হতে থাকবে ৷ তারা এক আয়াতের সাথে অন্য আয়াত সংযুক্ত করে
স্বার্থ উদ্ধার করার তৎপরতা অব্যাহত রাখবে ৷ আল্লাহ তাদেরকে কখনো ক্ষমা করবেন না ৷
তাদেরকে সুপথও দেখাবেন না ৷ তারা নিজেরাই মনে করবে কোরআনকে তারা এত বুঝেছে অন্যরা
তাদের সমকক্ষ নন ৷ পাঠক সমাজ! আলোচ্য বিষয় ৩(৫৫) আয়াতের প্রতিকূলে রাষ্ট্র গঠন
করায় কি কোরআন মিথ্যা হয়ে যাবে? না, কখনও তা নহে বরং সর্ব কৌশলীর কৌশল তাদেরকে
পরাস্ত করে দেবে ৷ আর একদল বলবে যে, রোম সাম্রাজ্য পতনের পর, এ অর্থ পূর্ণ হয়ে
গেছে ৷
“তাহাদিগের জন্য আছে সুসংবাদ পার্থিব জীবনে ও
পারলৌকিক জীবনে: আল্লাহর বাণীর
কোন পরিবর্তন নাই; উহাই মহা-সাফল্য ৷ “ ১০(৬৪) কোরআন ৷
যারা আল্লাহ ও আল্লাহর রসুলের অনুসরণ করে তাদের জন্য ইহলোকে ও পরলোকে সুসংবাদ
রয়েছে ৷ আর যারা হযরত (সঃ) পর নবী দাবী কারক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন তারা তো এরূপ
সুসংবাদকে তাদের কৃতিত্ব বলে প্রচার করে ধর্মগুরু নামে অভিহিত হয়ে গেছেন এবং
ভবিষ্যতে তারা নবী রসুলদের আসন সংখ্যা বৃদ্ধি
করে তাতে উপবিষ্ট হবেন ৷ কারণ তারা চায় না যে, সাধারণ নাগরিকত্ব, বরং তাদের প্রয়োজনে প্রধান মন্ত্রীর আসন
৷ তারা ঐ সাধকের ন্যায় পানি চক্রের কথায় ভাবেন যার কোন ইতি নেই ৷ তবে তারা স্বীকার
করেন যে, শুরু যখন আছে তার শেষও আছে ৷ কিন্তু নবী আগমন ধারার কোন সমাপ্ত নেই ৷
১৯৪৭ সালে ইহুদি রাষ্ট্রর প্রথম জন্ম হয় জাতিসংঘে
আইন পাশের মাধ্যমে ৷ পাঠক সমাজ! বার বার কেন এ রাষ্ট্রের কথা প্রসঙ্গে রচিত হচ্ছে?
হয়তো অনেকের মনে এ প্রশ্ন জাগরিত হওয়াটা স্বাভাবিক ৷ কিন্তু ইহার উদ্যোক্তা স্বয়ং আল্লাহ ৷ কারণ হাদিসে বর্ণিত আছে এ
রাষ্ট্রের মধ্যে বা অন্য কোথাও যদি একজন ইহুদি লুকিয়ে থাকে তাহলে পাথরও চীৎকার করে
কথা বলবে বা দেখিয়ে দিবে ৷ তাই এ কথা প্রকৃতির ভাষা ৷ আজ পাক-কোরআনের বিপরীতে কি
একটি রাষ্ট্র গঠন হল না? বিরুদ্ধবাদীরা হয়তো আমার কথার বিপরীতে সোচ্চার হতে পারে ৷
এ আয়াতকে কেন্দ্র করে নিজের জীবন বৃত্তান্ত টেনে আনায় অধিক যুক্তি সঙ্গত মনে হয়েছে
৷ এ রাষ্ট্রের গঠন সম্পর্কে তফছীর মারে-ফুল কোরআনে বিশদভাবে আলোচিত হয়েছে ৷ সুতরাং ইহাতে
নতুনত্ব কিছু নেই ৷ সোজা কথায় বলা যায় কুচক্রী মহল যখন ইসরাইল রাষ্ট্র গঠন
সম্পর্কে দৃঢ় আস্থা পোষণ করেছে তখন আল্লাহ সর্ব কৌশলী যে পন্থা অবলম্বন করেছেন তা হল
এ যে, ১৯৪৭ সালে আমার জন্ম নির্ধারিত করে দিয়েছেন যাতে এ দৃষ্টান্ত জনসমক্ষে তোলে
ধরতে পারি ৷ তবে ইহার মূল জবাব আল্লাহ ভাল জানেন ৷ কেবল উপস্থাপক হিসেবে আমার
দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে ব্রতী হয়েছি ৷ যদি এ ব্যাপারে আরও প্রশ্ন জাগে তবে তাঁদের
প্রকৃতিকেই জিজ্ঞাসা করা সমীচীন হবে বলে মনে করি ৷
“মুনাফিক-গন তো জাহান্নামের নিম্ন স্তরে রহিবে এবং তাহাদের
জন্য তুমি কখনও কোন সহায় পাইবে না ৷” ৪(১৪৫) কোরআন ৷
অবিশ্বাসীদের চেয়ে মুনাফিকগণ অত্যধিক জালেম হয়ে
থাকে ৷ তারা একদিকে নিজেদেরকে মুসলিম হিসেবে পরিচয় দান করবে অন্যদিকে আল্লাহর আয়াত
সমূহে খুঁত বের করে যা সত্য নয়
তা নিয়ে মানুষকে বিপদের দিকে ঠেলে দিবে ৷ তাদের মধ্যে কাদিয়ানী জামাত অন্যতম ৷
কাদিয়ানী সাহেব ক্ষণে ঈসা, ক্ষণে ইমাম মেহেদি, ক্ষণে মাহদী যার অর্থ ওহী প্রাপ্ত,
ক্ষণে ঈসা সদৃশ, আবার মুখে বলে ঈসা সদৃশ বলা কি
অপরাধ? ক্ষণে বলে যে, ‘ঈসার মৃত্যু ব্যতীত ইসলামকে জিন্দা করা যাবে না’ . তাদের এ
সব ভ্রান্ত মতবাদ বিশ্বে বিশেষভাবে মিডিয়ার যুগে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে
চলেছে ৷ আর ইহা অবিশ্বাস্য যে যিনি নবীর তালিকায় থেকেও কোন ওহী দাবীদার নহেন সে
ক্ষেত্রে মাহদী নাম যুক্ত করে ওহী প্রাপ্ত বলা আল্লাহর কাছে তা কতটুকু গ্রহণযোগ্য
তিনিই তা ভাল জানেন ৷ একথা অনস্বীকার্য যে, স্বয়ং ঈসা (আঃ) যদি বলে তিনিই ঈসা
(আঃ), তবুও লোকে তাঁকে বিশ্বাস করবে না, তিনি যদি বলেন পাক-কোরআন সত্য বরং
আহমদিয়াত জামাত ভ্রমে পতিত হয়েছে ৷ অবশ্যই তারা একথা কিছুতেই মানবে না ৷ কারণ কাল
শেষে মসি-সম্রাটের সংখ্যা অত্যধিক বৃদ্ধি পাবে ৷ তবে ভুললে চলবে না তৃতীয় কাল বলেও
এককাল রয়েছে যখন কাকেও সময় দেয়া হবে না ৷ (মারে-ফুল কোরআনের ও ইঞ্জিলের আলোকে) ৷
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন