বৃহস্পতিবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১২

আমার কথা প্রথম খণ্ড (১৪)


আমার কথা   প্রথম খণ্ড (১৪)
আবুলকালামআজাদবাসু
20/12/2012

অন্তঃ-চক্ষু বিশেষজ্ঞ বিশ্ব মানব-রে,
অবিশ্বাস্য মোর বুলি শুভ্র বিলোচনে,
মহা-গ্রন্থে কথিত বিশ্বমৈত্রী স্থাপনে ৷
ভুবনে যত ভণ্ড নবীর আগমন
কাদিয়ানী তাদের মধ্যে জঘন্যতম
নিজেই প্রকাশ করে সে-ই কৃষ্ণ রূপী
কল্কি অবতার, যদি হয় আগমন -

যাঁদের অন্তঃকরণ প্রসারিত, ধর্মে যাঁরা কট্টর ও বিশেষিত এবং বিশ্বে সকল বোধ শক্তি সম্পন্ন লোকদিগের প্রতি আকুল আবেদন এ যে, বিশ্বমৈত্রী, ঐক্য, সাম্য, ভ্রাতৃত্ব ইত্যাদি কর্ম সম্পাদনের লক্ষ্যে ইতিপূর্বে যাঁদের ভূ-তে আবির্ভাব ঘটেছিল তাঁদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে পুনরায় উহাই অবগত করার দায়িত্ব ও কর্তব্য বিশ্বপ্রকৃতি কাকে যেন স্থির দিক নির্দেশনা দিয়েছে ৷
পাঠক সমাজই এ বিবেচনা করবেন কে ভণ্ড নবী এবং ইঞ্জিলের হুঁশিয়ারি মতে কোন এক ব্যক্তি যে ঈসার নাম নিয়ে বলবে, ‘আমিই ঈসা’ ৷ মুখে যে কেউ বলতে পারে যে, ‘সে কৃষ্ণ,’  ‘সে বুদ্ধ’, কিন্তু যখন প্রমাণ হাজির করতে বলা হয়, তখন তারা কেউই সঠিক নিশ্চয়-বোধ, নির্ভুল তথ্য পেশ করতে সক্ষম হয় নাই এবং হয়তো হবেও না ৷ এ ব্যাপারে বলা যায় যে, ‘আল্লাহই সহায়’ ৷ ঘটনার দৈব সঙ্কেত প্রাপ্তির পর মনস্তাপে প্রায় দুটি বৎসর নিজেকে অবরুদ্ধ করে কেবল বিভিন্ন ধর্ম গ্রন্থ পাঠে উদ্যোগী হই ৷ দুটি বৎসর গত হল, ‘নির্ণীত মসি’ পরিচালনা করতে গিয়ে ভাবনায় আসে, হঠাৎ লিখবো বা কি ! নির্দেশ পালনের অনুভূতি জাগ্রত থাকা সত্ত্বেও সম্মুখ-পানে অগ্রসর হবার কোন সুযোগ হয়নি ৷ স্মৃত হৃদয় মনঃস্থির বিষয় সম্পর্কে বলে, ‘কর্তব্য পালনে অক্ষমতা প্রকাশ অর্থ অনন্ত জীবন বৃথা ৷’
“এবং বলে, আমাদিগের দেবতাগুলি শ্রেষ্ঠ, না ঈসা? ইহারা কেবল বাক বিতণ্ডের উদ্দেশ্যেই তোমাকে এ কথা বলে ৷ বস্তুত: ইহারা-তো এক বিতণ্ডা-কারী সম্প্রদায় ৷ সে তো ছিল আমারই এক বান্দা, যাহাকে আমি অনুগ্রহ করিয়াছিলাম এবং করিয়াছিলাম বনী ইসরাঈলের জন্য দৃষ্টান্ত ৷ আমি ইচ্ছা করিলে তোমাদিগের মধ্য হইতে ফেরেশতা সৃষ্টি করিতে পারিতাম, যাহারা পৃথিবীতে উত্তরাধিকারী হইত ৷ ৪৩ (৫৮-৬০) কোরআন ৷

হযরত ঈসা (আঃ) একজন মানুষ এবং আল্লাহর বান্দা ছিলেন ৷ তিনি ইসরাঈল জাতির জন্য প্রেরিত সু-সংবাদ দাতা ৷ কিন্তু একদল তাঁর প্রস্থানের পর তাঁকেই খোদা বলে পূজা করতে লাগল ৷ তারা তিন খোদার মধ্যে এক খোদা তাঁর পুত্র বলা শব্দের আসল অর্থ ধরে পুত্র বলে পূজা, অর্চনা করতে লাগল ৷ সৃষ্টির তিন জাতির মধ্য থেকে, ফেরেশতা জাতিকে আনয়ন করা যেত যাঁদেরকে মাতাপিতা ছাড়াই সৃষ্টি করা হয়েছে এবং তাঁরাই হতেন এ পৃথিবীর উত্তরাধিকারী, কিন্তু মানুষকে দেয়া হয়েছে ফেরেশতার চেয়ে বেশী প্রাধান্য ৷
বর্ণিত মসিকে বার বার সম্মুখে পরিচালনা করবার জন্য মস্তিষ্কের সদর দপ্তরে অর্জিত চেতনাকে উৎসাহিত করা সত্ত্বেও কথিত মসি পথ যাত্রায় পুনঃ পুনঃ বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে কারণ কিঞ্চিৎ জ্ঞান লাভ এর মাধ্যমে উহার বাস্তব রূপায়ণ কোন মসির পক্ষেই সম্ভব নয় ৷ কাল্পনিক, অজানা, আজগুবি কাহিনী যা এতদিন স্থান পায়নি, তা সমস্তই চতুর্দিকে বেষ্টন করে আছে, বর্ণিত মসির হাতে যে মসি তুলে দিয়েছেন তা বৃথা হয়ে গেল বলে মনে হচ্ছিল ৷ ‘অকৃতকার্যতা দৃঢ় প্রত্যয়ের কাছে হারতে বাধ্য ৷’ প্রেরণা-দাতার উৎসাহ প্রবল বেগ নিয়ে হৃদয় মাঝে উত্তাল ঢেউ সৃষ্টি করেছে ৷
“এবং আমি মরিয়ম তনয় ও তাঁহার জননীকে করিয়াছিলাম এক নিদর্শন, তাহাদিগকে আশ্রয় দিয়াছিলাম এক নিরাপদ ও প্রস্রবণ বিশিষ্ট উচ্চ ভূমিতে ৷ ২৩ (৫০) কোরআন ৷
বর্ণিত জায়গায় হযরত ঈসা (আঃ) এর জন্ম হয়েছিল ৷ জানা যায় জায়গাটা খেজুর বাগান বিশিষ্ট উচ্চভূমি ছিল এবং ঝর্ণাধারা প্রবাহিত ছিল ৷ পুনর্বার তাঁর আগমন এরূপ স্থানে  হবে কিনা আল্লাহ তা ভাল জানেন ৷ প্রত্যেক কিছুর পেছনে গবেষণা প্রয়োজন ৷ তাই শিক্ষা ছাড়া বিকল্প কোন পথ নেই ৷ পণ্ডিত, সাহিত্যিক যাঁরা তাঁরা প্রাকৃতিক দৃশ্য অবলোকন করে হৃদয়ের প্রবল ইচ্ছাশক্তি রচনা করে থাকেন ৷ বিজ্ঞানী বাস্তব গবেষণার মাধ্যমে নতুন কিছু আবিষ্কারের প্রচেষ্টা চালান ৷ সূফী, সাধক, অলি, দরবেশ, নবী রসুলগণ এলহাম, ঐশী বাণী প্রাপ্ত হয়ে এ ধরণীতে নিয়ে এসেছেন মানুষের জন্য কল্যাণ ৷
“সে দোলনায় থাকা অবস্থায় ও পরিণত বয়সে মানুষের সহিত কথা বলিবে এবং সে হইবে পুণ্যবানদের একজন ৷” ৩ (৪৬) কোরআন ৷
উপরোক্ত আয়াতে হযরত ঈসা (আঃ) পুনরাগমনের সংবাদ বহন করে ৷ কারণ তাঁকে কোন রকম শূলে চড়ানো ব্যতীত অবিশ্বাসীদের মধ্য থেকে আল্লাহর দিকে উত্তোলন করা হয়েছে ৷ ইহাই সরল অর্থ কোরআন প্রকাশ করে যে, ‘যদি তিনি উত্থিত না হয়ে থাকেন তবে তাঁর বাকী জীবন কাহিনী কৈ?” আর আল্লাহর কোন প্রয়োজন ছিল না যে, ‘পরিণত বয়সে মানুষের সহিত কথা বলিবে’ এ বাড়তি আয়াত নাযিল করার ৷ কেবল এ টুকু থেকে প্রমাণিত যে তিনি গত হয়েছেন সেকাল পূর্ণ হবার পর আরও এককাল নির্ধারিত করা হয়েছে যে তিনি আবার আসবেন ৷ ইহার বিপরীতে বলার লোক অনেক রয়েছে ৷ তা পাঠক সমাজ ধীর ধীরে উপলব্ধি করতে পারলে উৎসাহী হয়ে আরও সম্মুখে অগ্রসর হবেন ৷ আটত্রিশ বৎসর বয়সে যে দৈব ঘটনা যোজিত হল তা হয়তো অন্য রূপে ধরা দিবে এ আশায় আরও দুটো বছর কেটে গেল ৷ কোন রকম ইঙ্গিত, আভাস বা এলহাম জাতীয় কোন কিছুই শুনা গেল না ৷ সেদিন যিনি মনে প্রবল জাগিয়ে তুলল তাঁকে কি জবাব দেব যদি উচ্চারিত মসি হাতে নিয়ে লিখতে না পারি ?



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন