সোমবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১২

দ্বিতীয় বিবাহ সম্পর্কে কোরআন কি বলে?


দ্বিতীয় বিবাহ সম্পর্কে কোরআন কি বলে?
শাহনাজ আক্তার রুমি
চট্টগ্রাম ৷
10/12/2012
১৩টি বিবাহ নবীর জন্যে উম্মতের জন্যে নয় ৷
সবার জীবনে একবার ভালোবাসা আসে ৷ স্বামী, পুত্র-কন্যা নিয়ে বসবাস করে ৷ কিন্তু হঠাৎ করে কোন একজনের কারণে অর্থাৎ তাদের চরিত্রের মধ্যে অপবিত্রতার ছোঁয়ায় নির্দোষ একজনের সংসারে নেমে আসে ঝড় তুফান এমন কি বিচ্ছেদের পালা ৷ অনেকে বিচ্ছেদর কারণে নতুন সংসার গড়ে তোলে ৷ ফলে সন্তান-সন্ততি যদি থাকে তারা মাতা-পিতৃহীন অবস্থায় এসে দাঁড়ায় ৷ বিশেষ করে মহিলা কোনরূপ আশ্রয় বিহীন অবস্থায় এ সমাজে বসবাস করা দায় ৷ দ্বিতীয় বিবাহ বা দ্বিতীয় সংসার প্রায়ই ঝামেলা মুক্ত নয় ৷ ফলে বিবাহের নামে যে আশ্রয়স্থল অনেক ক্ষেত্রে আশ্রিতার রূপ নেয় ৷ সে ঘরেও থাকতে পারে স্ত্রী, কন্যা, বা সন্তান-সন্ততি ৷ তাদের সাথে জীবনকে খাপ খাওয়ায়ে নেয়াও অনেক সময় কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়ায় ৷ অথবা কেহ অবলা নারীকে সমাজে ঠাঁই দিতে গিয়ে দ্বিতীয় বিবাহ করে থাকে ৷ বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে বহু বিবাহ অথবা সন্তানহীন মহিলা বিপাকে পড়ে আশ্রিতা থেকে নরপিশাচদের হাতে পড়ে ৷ এভাবে সৃষ্টি হচ্ছে পতিতালয় ৷ কে রুখে দাঁড়াবে এই জঘন্য হাত থেকে তাদের রক্ষা করতে ?
আল্লাহ বলেন…..
“নিজেদের পত্নী অথবা অধিকারভুক্ত দাসীগণ (বর্তমানে দাস প্রথা বিলুপ্ত) ব্যতীত, এতে তারা নিন্দার যোগ্য হবে না ৷ তবে এতদ-ব্যতীত অন্য নারীকে কামনা করিলে তখন তা হবে সীমালঙ্ঘন ৷” (সূরা-মুমিনুন ৬-৭)
আর এই সীমালঙ্ঘন কারী দেশের দশের শত্রু ৷ তারা কখনোই ভালো কিছু বা সংসারে শান্তি বয়ে আনতে পারে না ৷ সতী-সাধ্বী স্ত্রী; সে কি সহজে মেনে নিতে স্বামীর সীমালঙ্ঘন ও কুচরিত্র-কর্মটি ৷ নারীরা সহজে তা মেনে নিতে পারে না এই কারণে:- তারা বলেন, “তারা দু মিলে এক দেহ, এক মন, সেখানে দেহকে দ্বিখণ্ডিত করা হয় ৷” যারা বহু বিবাহ করে থাকে তারা নিষ্পাপ মন-মন্দির ভেঙ্গে চুরমার করে কি পায়! সেখানে দৈনন্দিন জীবনের সংঘাত আর হিংসা, রেষারেষিতে জীবন এক প্রকার অভিশাপে পরিণত হয় ৷

সেই সব নারীরা মনে করে: “আমরা তো কোন দোষ করি নি, বরং এক স্বামীর দিকে দিন অতিবাহিত করেছি দ্বিতীয় কোন পুরুষ দিকে নজর দিই নি, তবে কোন ভাগ্য দোষে এমন অভিশাপ বা বিচ্ছেদের মত অঘটন ঘটল ৷”
যুগে যুগে এ সব ঘটনা ঘটে যাচ্ছে ৷ প্রত্যেক নারীর জীবনে যা সাধারণত: হয় তা হল নারীরা প্রাথমিক অবস্থায় নিজ-জীবন থেকে অধিক ভালবাসে এবং স্বামী সৎ পথে থাকলে জীবন দান করতে কুণ্ঠিত বোধ করে না ৷ কেবল পারে না দিতে স্বামীর ভাগ ৷ এটা এরূপ যে, ‘না পাওয়ার বেদনা তবুও সয়, কিন্তু পেয়ে হারাবার বেদনা বড়ই কষ্টকর ৷’
পবিত্র হাদিছ শরিফে ফরমাইছেন: ‘যদি কাহাকেও সিজদা জন্য আদেশ করিতাম, তাহা হইলে নিশ্চয় স্ত্রীকে হুকুম করিতাম, সে যেন তাহার স্বামীকে সিজদা করে ৷’

স্বামীর মর্যাদা স্ত্রীর নিকট অন্য যে কোন মানুষের ঊর্ধ্বে, সে-ই স্বামীকে কোন স্ত্রী হারাতে চায় না ৷ তবুও নানান কারণের পরিপ্রেক্ষিতে স্বামীদের বিবাহ করতে হয় ৷ কারণ নারী যদি বন্ধ্যা হয়, পাগল বা সাংঘাতিক রোগাক্রান্ত হয় ৷ স্বামী সাথে থাকতে অক্ষম বা স্ত্রী মৃত্যু হলে কেবল ক্ষেত্রে ইচ্ছে করলে দ্বিতীয় বিবাহ করা যায় ৷
কিন্তু কিছু স্বার্থান্বেষী, দুশ্চরিত্র, লম্পট এবং কামুক-মনা বিশিষ্ট লোক কোরআনের সুরা নিসার ৩নং আয়াত চার বিবাহের কথ বলে থাকেন কিন্তু এ আয়াত রয়েছে বিশেষ শর্ত ৷ তারা না বুঝে হযরত (সঃ) তেরোটি বিবাহের উদাহরণ পেশ করে থাকেন ৷
এ সব  ব্যাপারে তারা নানাজনে নানানভাবে অতিরঞ্জিত করে বর্ণনা করে থাকেন ৷ আমরা কোরআন কি বলে তা দেখি:
“তোমরা যদি আশংকা কর যে, ইয়াতীম মেয়েদের প্রতি সুবিচার করিতে পারিবে না, তবে এই বিবাহ করিবে নারীদের মধ্যে যাহাকে তোমাদের ভালো লাগে, দুই, তিন অথবা চার ৷”
(দাসী অর্থ ক্রীতদাসী অথবা যুদ্ধ-বন্দিনী উভয়কে বুঝায় ৷ তখন দাস-দাসী ব্যবসা-প্রথা এতো ছিল বলে তাদের উপর এবং বিশেষ করে ইয়াতিম উপর বিবাহ ও মাহর ইত্যাদি ব্যাপারে অবিচার করিত ৷ ইয়াতিমের সম্পর্কে জোর তাগিদ দেওয়ায় সাহাবীয়ে কেরাম তাদের ব্যাপারে বিব্রত বোধ করিলে উক্ত আয়াত নাযিল হয় ৷ তাছাড়া তখন কার দিনে ধনবান সুন্দরী নারীদের অনায়াসে বিবাহ করা কোন ব্যাপার ছিল না ৷ যত নির্যাতন আর অনাচার হতো কেবল ইয়াতিমদের উপর ৷ আমার নবীজী ছাড়া এমন কে আছে যে, বহু বিবাহ সত্ত্বেও স্ত্রীদের মাঝে সমান অধিকার, সুবিচার, সবার প্রতি সম-দৃষ্টি, ভাগ-বাটোয়ারার ক্ষেত্রে সম-বণ্টন ইত্যাদি বজায় রাখার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ? পৃথিবীর বুকে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত যা আর কারও পক্ষে সত্যিই অসম্ভব ৷
আল্লাহ যেমন ক্ষেত্র বিশেষে চার স্ত্রী পাণি গ্রহণের অনুমতি প্রদান করেছেন তেমনি উক্ত শর্তাদি পূরণে অক্ষম হলে একজন বিবাহের তাগিদ দিয়েছেন ৷
কোরআনের ঘোষণা:
“কেবল মাত্র একজনকেই বিবাহ কর ৷”
পৃথিবীর বুকে মহা-গ্রন্থ আল-কোরআনই একমাত্র ধর্মগ্রন্থ যেখানে কেবলমাত্র একটি বিবাহ কথা উল্লেখ করা হয়েছে ৷ আর কোন ধর্মগ্রন্থ একথা নেই যে, যেথায় পুরুষকে কেবলমাত্র একজন মাত্র স্ত্রী গ্রহণ করার আদেশ দিয়েছে ৷ পবিত্র কোরআন সূরা নিসায় নিম্ন-লিখিত আয়াতে পরিষ্কার বলা হয়েছে: “তোমরা তোমাদের পছন্দ মত দুই, তিন অথবা চার জন মহিলাকে বিবাহ কর, কিন্তু যদি (তাদের সাথে) সুবিচার করতে পারবে না বলে তোমরা আশংকা কর তাহলে কেবলমাত্র একজনই বিবাহ কর ৷” (সুরা নিসা-৩)
সূরা নিসা-১২৯ নং আয়াত আরও ঘোষণা করা হয়েছে:
“স্ত্রীদের মধ্যে পুরোপুরি ইনসাফ করা তোমাদের পক্ষে কখনই সম্ভব নয় ৷”(নিসা-১২৯)
আল্লাহ-তায়ালা এই আয়াত নাযিল করে বহু বিবাহ অনুৎসাহিত করে হুশিয়ার করে দিয়েছেন ৷ যাই হোক মুসলমান হিসেবে একাধিক স্ত্রী গ্রহণ চিরাচরিত বিধি নয় বা বাধ্যতামূলকও নয় ৷ ইহুদি, বেদুঈন, খ্রিষ্টান, মুশরিক, কাফের যত বিধর্মী লেখকরা নবীজীর সত্যিকার আদর্শ বুঝতে পারেনি বলেই-কামুক ও ইন্দ্রিয় বশীভূত হয়ে বহু বিবাহ করেছেন, এই অপ-ব্যাখ্যা অবশ্যই দিয়েছেন আসল সত্য ব্যতীত ৷ তারা যদি এতটুকু বিশ্লেষণ করতেন যে কোন সময় কখন তিনি (সঃ) একাধিক বিবাহ করেছেন এবং কেন ? সত্যিকার অর্থে এ লেখা থেকে এতটুকু ভালোবাসা জাগ্রত হয় তাহলে তারা উপলব্ধি করবে কেন নবীজী বহু বিবাহ করেছিলেন ৷
কোরআনে আল্লাহ রসুল সম্পর্কে কি বলেছেন:
“বল, ‘আমি বিভ্রান্ত হইলে বিভ্রান্তির পরিণাম আমারই এবং যদি আমি সৎপথে থাকি তবে তাহা এই জন্য যে, আমার প্রতিপালক ওহী প্রেরণ করেন৷ তিনি সর্বশ্রোতা, সন্নিকট ৷’ (৩৪ সাব আয়াত-৩৫) ৷
“বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাস, তাহলে আমাকে অনুসরণ কর, এতে আল্লাহ তোমাদিগকে ভালবাসবেন এবং তোমাদিগের অপরাধ ক্ষমা করবেন ৷” (আল-ইমরানঃ আয়াত-৩১) ৷
“নিশ্চয় তোমাদের জন্যেই রাসূলু ল্লাহ মধ্যে উত্তম নমুনা রয়েছে”
আল্লাহ যে নবীকে অনুসরণ করতে বলেছেন; প্রশংসা করেছেন: তাঁর চরিত্রের, তাঁর আদর্শের  তাতে কোন কিছুতেই কোন রেশ থাকতে পারে না ৷ অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের উচিত মিথ্যে রচনা না করে তাঁর জীবনী  পাঠ করা, সেই সাথে সত্য উপলব্ধি করে বানোয়াট কাহিনী উপস্থাপন না করা ৷ তাঁর জীবনের মূলেই ছিল তাওহীদ ৷ নারীদের সঠিক মর্যাদা দান, বিধবা অসহায় নারীর আশ্রয়; ধর্মপ্রচার ও মানব কল্যাণের খাতিরে নবীজীকে অসময়ে বহু বিবাহ করতে হয়েছিল যেমন:
নবীজীর বয়স যখন ২৫ বৎসর তখন তিনি বিবাহ করলেন ৪০ বৎসর বয়স্কা এক প্রৌঢ়াকে (খাদিজা) ৷ যদি নবীজী সত্যিই লাম্পট্য ও কামুকতা যৌবন আসক্ত হইতেন তাহলে দীর্ঘ পঁচিশ বছর ধরে এক স্ত্রীর সঙ্গ-কাল কাটাতেন না ৷ কারণ ৪০ বৎসর বয়স পর্যন্তই মানুষের কাম-প্রবৃত্তি প্রবল থাকে ৷ বস্তুত: লাম্পট্য ও কামুকতা যৌবনের সহচর ৷ নবীজীর প্রথম ৫০ বৎসর কাল অতিবাহিত হবার পর প্রায় ৬৫ বছর বয়সে বিবি খাদেজার মৃত্যু বরণ করেন ৷ ৩৫ বৎসর হইতেই তিনি হেরা গিরি গুহায় কঠোর সাধনায় মগ্ন ৷ ৪০ বৎসর বয়সে তিনি নবুয়ত লাভ করেন ৷ নবীজী গৃহ সুখ শান্তির চেয়ে ধর্ম প্রচারে লিপ্ত হয়ে পড়েন ৷
খাদিজা মৃত্যুর পর নবীজী অন্য সব বাকি ১২টি বিবাহ করেছেন, তাঁদের মধ্যেও সবার ঊর্ধ্বে স্থান দিয়েছেন বিবি খাদিজাকে ৷ তিনিই প্রথম নারী নবীর প্রচারিত সত্য গ্রহণ করেছেন ৷ নারী জাতির গৌরব মহীয়সী নারী বিবি খাদিজা (রাঃ) ৷ নবীজী যাঁদের বিবাহ করেছেন তাঁদের তালিকা নিম্নরূপ:
১৷ খাদিজা (বিধবা), হযরত (সঃ) বয়স তখন ২৫ বছর ৷
২৷ সওদা (বিধবা), হযরত (সঃ) বয়স তখন ৫১ বছর ৷
৩৷ আয়েশা (কুমারী), হযরত (সঃ) বয়স তখন ৫২ বছর ৷
৪৷ হাফসা (বিধবা), হযরত (সঃ) বয়স তখন ৫৪ বছর ৷
৫৷ জয়নব-বিনতে-খোজাইমা (বিধবা), হযরত (সঃ) বয়স তখন ৫৫ বছর ৷
৬৷ উম্মে সালমা (বিধবা), হযরত (সঃ) বয়স তখন ৫৫ বছর ৷
৭৷ জয়নব (বিধবা, জায়েদের পরিত্যক্ত স্ত্রী, তাঁর (সঃ) বয়স তখন ৫৬ বছর ৷
৮৷ জওয়ায়েদা (বিধবা, বনি-মুন্তালিক গোত্র), তাঁর বয়স তখন ৫৬ বছর ৷
৯৷ রায়হানা (বিধবা, ইহুদি-নী), তাঁর বয়স তখন ৫৭ বছর ৷
১০৷ মেরী (বিধবা, খ্রিষ্টান), তাঁর বয়স তখন ৫৭ বছর ৷
১১৷ সফিয়া (বিধবা, ইহুদি-নী), তাঁর বয়স তখন ৫৮ বছর ৷
১২৷ উম্মে হাবীবা (বিধবা, আবু সুফিয়ানের কন্যা), তাঁর বয়স তখন ৫৮ বছর ৷
১৩৷ মায়মুনা (বিধবা), তাঁর বয়স তখন ৫৯ বছর ৷

প্রায় ৬৩ বছর বয়সে তিনি (সঃ) ইহলোক ত্যাগ করেন ৷ বিজ্ঞ সমাজ যদি তাঁর বয়সের তালিকা এবং প্রাথমিক অবস্থায় বিধবা বিবাহ যাঁর ছিল চার সন্তান-সন্ততি, পরবর্তীতে ১২টি বিবাহ যাঁরা ছিলেন বিধবা একমাত্র আয়েশা ব্যতীত, তাতে কামুকতার বা বিলাসিতার পরিচয় পাওয়া যায় না ৷ বহু বিবাহ করার কারণগুলো ছিল: ধর্ম প্রচার, মৈত্রী-ভাব গড়ে তোলা, আত্মীয়তা গড়ে তোলা, এবং সর্বশেষ আল্লাহর ইচ্ছা বাস্তবায়ন করা উপমার মাধ্যমে অধীনস্থ  নারীদের সম-অধিকার বণ্টন, স্বামীর কর্তব্য স্ত্রীদের প্রতি এবং বিধবাদের স্বাধীন জীবন যাপন করা বিবাহের মাধ্যমে, জীবনাদর্শে এসব প্রতিষ্ঠা করাই ছিল মূল উদ্দেশ্য ৷












1 টি মন্তব্য:

  1. بسم الله الرحمن الرحيم
    সকল প্রশংসা আল্লাহর। অসংখ্য দরুদ নাযিল হোক তাঁর নবীর উপর বারবার।
    [link|http://www.somewhereinblog.net/blog/ABDULKADIR1/29672238|১ম পর্ব ]

    [link|http://www.somewhereinblog.net/blog/ABDULKADIR1/29675055|২য় পর্ব]


    এবার আসেন আমরা ভালো খারাপের মানদণ্ড নিয়ে আমার এই দুই পর্বের লেখায় যা আলোচনা করলাম সেই আলোকে বিচার করে দেখি হুমায়ূন আহমেদের দ্বিতীয় বিবাহকে, এবং ইতিহাসের আরো যারা ২য় বা আরো বেশী বিবাহ করেছে তাদেরকে। ১ম পর্বে যা বলেছিলাম সেটার সারাংশ যা দাঁড়ায় তা এই যে আমরা মোটামুটি তিন ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে কোন কাজকে ভালো খারাপ বলি বা ভালো খারাপ হিসাবে নির্ধারণ করি।

    ১- ধর্ম দিয়ে নির্ধারণ
    ২- সামাজিক প্রথা দিয়ে নির্ধারণ
    ৩- নাস্তিকদের নির্ধারণ (হতে পারে সেটা যুক্তি দিয়ে বা অন্য কিছু দিয়ে)

    তো যারা মুসলমান তারা তো তাদের ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে এই ব্যাপারে টুঁ শব্দটিও করতে পারেন না। কেননা খোদ আসমান জমীনের স্রষ্টা আল্লাহ্‌ই শর্ত সাপেক্ষে চারটি বিবাহের অনুমতি দিয়ে রেখেছেন পূর্বের স্ত্রীর অনুমতি ছাড়াই। ভালো করে বুঝে নিন শর্তসাপেক্ষে শুধু অনুমতি আছে কিন্তু কোন উৎসাহ দেয়া হয়নি। মুসলমানের কাছে সেটাই বৈধ যেটা আল্লাহ্‌ বৈধ করেছেন; সেটাই ভালো যেটা আল্লাহ্‌ ভালো বলেছেন। তার নিজের মন কি বললো, তার সমাজ কি বললো ; আল্লাহ্‌র ফায়সালার পর এসবের পাই পরিমাণ কোন মূল্য নেই।

    আর নাস্তিকদের এ ব্যাপারে কথা বলা তো চরম হাস্যকর ব্যাপার। হুমায়ূন তো কারো কোন ক্ষতি করেন নি।নাস্তিকদের মতে তো যে কেউ যে কোন কাজ করতে পারে, যদি অপরের কোন ক্ষতি না হয়। নাস্তিকদের কাছে তো লিভ টুগেদার, সমকাম সব বৈধ, আর হুমায়ূন তো এগুলো করেননি, উনি তো বিয়ে করে নিয়েছেন।চালুনি বলে সুঁই তর পিছে কেন ছিদ্র। আসলে তাদের ভাব দেখে যা মনে হয় সেটা হলো, তারা বিয়ে করার বিরুদ্ধে লেগেছে। কেউ একাধিক বিয়ে করে বৈধ পন্থায় যৌন চাহিদা মিটাতে গেলে তাকে তারা নারীলোভী, কামুক বলে গালি দেয়, পক্ষান্তরে লিভ টুগেদার করলে , সমকাম করলে এটাকে লম্পটরা ব্যাক্তি স্বাধীনতা, আধুনিকতা ইত্যাদি বলে প্রচার করে। ঐ যেমন নাকি মুসলমানরা পৃথক রাষ্ট্রের জন্য লড়াই করলে আমেরিকা বলে যে এরা বিচ্ছিন্নতাবাদী, সন্ত্রাসী; আর খ্রিষ্টানরা পৃথক রাষ্ট্রের জন্য লড়াই করলে আমেরিকা বলে যে এরা স্বাধীনতাকামী, এদের স্বাধীনতা দেয়া হোক। তারা সমকামকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে বলে, আর ২য় বিবাহের মত একটি চিরবৈধ ও শালীন কাজকে কামুকতা বলে প্রচার করে। অথচ কোন পুরুষের যদি প্রয়োজন থাকে তাহলে ২য় বিবাহ করা তার অধিকার। এখানে কোন লম্পটের নাক গলানোর কোন অবকাশ নেই।

    উপরের দুই ভিত্তিতে পাস করার পর রইলো সামাজিক প্রথার ভিত্তি। কিছুদিন আগেও তো এই উপমহাদেশে হাজার হাজার বছর ধরে চলে আসা একাধিক বিবাহের প্রথা ছিলো।। এখনো তো একেবারে বিলুপ্ত হয়ে যায় নি।আর সামাজিক প্রথা রক্ষা করতে হবে এটা কে বললো? তাহলে তো যারা আগের হাজার বছরের প্রথাকে ভেঙ্গে এই নতুন প্রথা চালু করেছেন তারাই চরম অন্যায় করেছেন । তাই বলতে পারি হয়তো হুমায়ূন এই অন্যায় প্রথাকে দূর করে আগের ভালো প্রথাকে ফিরিয়ে আনার জন্য এই কাজ করেছেন। কত মানুষ কত লাইনে সামাজিক প্রথা ভাঙছে তার কোন খবর নাই, সবাই লাগছে এই বিবাহের পিছনে। অথচ এটাকে ১ম স্ত্রী ও সমাজ স্বাভাবিকভাবে, উদারচিত্ততার সাথে মেনে নিলে কত পারিবারিক অশান্তি শেষ হয়ে যেত, সেটা কেউ চিন্তা করে না। তার উপর কথা হলো বর্তমানের এই মূর্খ, অর্বাচীন, লম্পট, ধর্ষক, খুনী, সন্ত্রাসী সমাজের কোন প্রথারতো কানা কড়ি মূল্যও নাই, মানারতো কোন প্রশ্নই আসেনা। এই সমাজের প্রথাইতো আমাদের মা বোনদেরকে শেষ করে দিচ্ছে, ধর্ষিতা বানাচ্ছে, বেশ্যা বানাচ্ছে, রাস্তার মজদুর বানাচ্ছে। শত ধিক আর থুতু মারি এই সমাজকে আর তার প্রথাকে। (হুমায়ূনতো সমাজের মাপকাঠিতে পাস করেননি, যদিও তাতে কিছু যায় আসেনা; কিন্তু নবীরা ও সাহাবীরা কিন্তু এই তিন মাপকাঠিতেই ১০০ ভাগ পাস।কারণ তাদের সমাজে বহু বিবাহ মোটেই কোন খারাপ কিছু ছিলোনা।এখান থেকেই বুঝে নিন হযরত সোলায়মান (আঃ) এর ১০০ জন স্ত্রী ছিলো শুনলে যে আপনার মনটা কেমন কেমন করে, মুখের কোণে বাঁকা হাসি ফুটে; এটা নিছক মূর্খতা আর সমাজের পূজা করার কারণে হয়।নবীরা কামুক নয়, যারা তাদের সমালোচনা করে তারাই সব বিশ্ব লম্পট ও কামুক; এবং তারা পুরা সমাজকে লম্পট বানাতে চায় এজন্য তারা কোমর বেঁধে এই চির বৈধ ও শালীন বিয়ে ব্যবস্থার বিরুদ্ধে লেগেছে। ) [link|http://www.sonarbangladesh.com/blog/Aminuddin/107136| এখানে ক্লিক করে দেখুন। ] সোলায়মান (আঃ) এর ব্যাপারটি আরো ক্লিয়ার হবে এই পোষ্টের শেষের দিকের আলোচনা দ্বারা।



    বাকীটুকু পড়তে চাইলে নীচের লিংকে যান।

    http://www.somewhereinblog.net/blog/ABDULKADIR1/29675662

    উত্তরমুছুন